নজরুল : অবিসংবাদিত চির উন্নত শির

হাফিজ রশিদ খান »

নজরুলের কবিতা, সংগীতকলা, কথাসাহিত্য ও অভিভাষণে তাঁর বিভিন্ন মাত্রার ব্যক্তিসত্তার প্রকাশ লক্ষ করা যায়। কখনও তিনি প্রচল অনিয়মের বিরুদ্ধে দারুণ দ্রোহী, নিমগ্ন ভাবুক, সাম্প্রদায়িকতা তথা মানুষে-মানুষে ভেদনীতির প্রতিবাদী এবং এসবের ঊর্ধ্বে মহান দার্শনিক, ধর্মীয় ও লোকায়ত চেতনার আশ্রয়ে নমিত সংসক্ত আধ্যাত্মিক সাধক, সহজিয়া ভক্তিমার্গে নিবেদিত উপাসক, কখনওবা প্রেম-বিরহের পারাবারে ভাসমান এক ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ বিচলিত সত্তা। এসবের মিলিত টানে তাঁর পাঠকের বোধে জাগে এক বিস্ময় চিহ্ন, যা একই সঙ্গে ন¤্রতা ও যুক্তিচেতনাকে পাশাপাশি সমাসীন করে। এখানেই শিল্পী হিশেবে নজরুল-এর অবিসংবাদিত অধিষ্ঠান।

আবার এটিও খুব গভীরভাবে সত্য যে, ওপরের অভিধাগুলোর কোনো একটাও তাঁর জীবনের পূর্ণ পরিচায়ক নয়। আবার যে-জীবন তিনি যাপন করেছেন এই ভূপৃষ্ঠে, ওই অভিধাগুলোর প্রত্যেকটিই আষ্টেপৃষ্ঠের সত্য হয়ে তাঁকে নানাভাবে  ঘিরে-ঘিরে ছিল। তাঁর সময়ের বিবেচনায় অর্থাৎ বিগত বিশ শতকের কুড়ি, ও তিরিশের দশকের ভারতবর্ষ ও তাঁর সৃজনশীল সত্তার তুঙ্গ বিকাশপর্বে যেকোনো ভারতীয় নাগরিকের জীবনেও হয়তো উল্লিখিত অভিধাগুলোর সংস্পর্শ সত্য হতে পারে। নজরুলও সেই সময়ের ওইসব অভিঘাত থেকে বিচ্ছিন্ন-একক কোনো অস্তিত্ব ছিলেন না। সেই সময়কার অগণন ভারতীয় নাগরিকসত্তার সঙ্গে নজরুলের পার্থক্য ছিল শুধূ এই যে, কবি নজরুল ছিলেন তাঁদের সকলকে ছাড়িয়ে এক অলৌকিক সৃষ্টিক্ষম প্রতিভার নাম। সেই সঙ্গে তাঁর সত্তায় যোগ হয় তৎকালীন ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষীয় আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক পরিবেশের প্রবল প্রতাপান্বিত বিরুদ্ধতা।

ওই উপনিবেশের ভেতর জীবন অতিবাহনকারী এবং সেই বাস্তবতাকে কোনোভাবেই স্বীকার করতে না-পারার দ্বৈরথে নিরত সংগ্রামরত ভারতবর্ষীয় সুপ্ত নাগরিকসত্তার পক্ষে তিনি ছিলেন অসাধারণভাবে সোচ্চার, একই সঙ্গে অনন্যসাধারণ কাব্যিকসত্তা ও সাংগীতিক রূপকার। দুঃখের বিষয় যে, কোটি-কোটি মানুষের অন্তরের ক্ষোভ-ক্রোধ-বেদনাকে কাব্যে সংগীতে গল্পে উপন্যাসে ভাষা ও সুররূপ দিতে তিনি যে-অস্থির অথচ সৃজনী সংরাগময় কালযাপন করেছেন, তা খুব বিশ্বস্ত ও মনোগ্রাহীভাবে আজতক কোনো জীবনীকার তুলে ধরতে সমর্থ হননি। বরং একশ্রেণির জীবনীকার নজরুলকে বরাবরই একপেশে দৃষ্টিতেই দেখে গেছেন। কেউ-কেউ তাঁর বিদ্রোহীসত্তাকে বড় করে দেখাতে গিয়ে তাঁর অত্যুচ্চ সুকুমারসত্তার সূক্ষ্মতাকে স্পর্শ করতে ব্যর্থ হয়েছেন বা পাশ কাটিয়ে গেছেন, কেউ-বা তাঁর ধর্মীয় উদ্দীপনামূলক সংগীতাংশে, বিশেষ করে হাম্দ্-না’ত, শ্যামা সংগীত ও গজলের ভেতরে লীলায়িত তাঁর সত্তাকে সব ছাড়িয়ে বড় করে দেখার প্রয়াস পেয়েছেন। অন্যদিকে ভারতবর্ষীয় পৌরাণিক আখ্যান, বিশেষ করে শ্যামা বা কালীদেবীর স্তুতিমূলক গীতাংশকে তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠতম সংগীতবিভাস বলে উপসংহার টেনেছেন কেউ-কেউ, যা নিঃসন্দেহে নজরুলকেখ-িতভাবে উপস্থাপনের ঊন চেষ্টমাত্র।

বাস্তবে আশালতা বা প্রমীলা,নার্গিস, রানু সোম বা ফজিলতুন্নেছাকেন্দ্রিক তাঁর ব্যক্তিজীবনের বিবাহ, প্রণয় ও বিচ্ছেদঘটিত যেসব উপাখ্যান ছড়িয়ে আছে, সেসবকে অনেক গবেষক-জীবনীকার-ঔপন্যাসিক সবিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছেন। এসবের কোনোটাই কবি নজরুলের জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন বিষয় নয় বটে, তবে প্রাণদীপ্ত, কৌতূহলী জিজ্ঞাসু হিশেবে বাংলাভাষী পাঠকেরা তাঁদের মানসপটে নজরুলের যে-অনন্যমাত্রিক সার্বিক মানবিক ও শৈল্পিক ভাবমূর্তি ধারণ করে আছেন যুগ-যুগ ধরে, সেই কাক্সিক্ষত রক্তমাংসসমৃদ্ধ প্রকৃত নজরুলকে এসবে খুব একটা পাওয়া যায় না বললে অত্যুক্তি হয় না।

অতিসম্প্রতি বিশিষ্ট মনস্বীসত্তা গোলাম মুরশিদ-এর ‘বিদ্রোহী রণক্লান্ত’ (২০১৮) নামক নজরুলের নতুন জীবন-অন্বেষণে তাঁর চলন-বলন ও সৃজনের যে-আলেখ্য রচিত হয়েছে তা বিপুল আগ্রহী নজরুল-অনুরাগীকে উচ্ছল ও উদ্ভাসিত করলেও সেখানেও প্রাধান্য পেয়েছে নজরুলের ধর্মেষণাই। ওই ধর্মেষণা নজরুল-জীবন ও সাহিত্যকর্মে মোটেও দুর্লক্ষ নয় বটে। তবে এও জোরালোভাবেই বলা যাবে, এও তাঁর মতো বিরাট প্রতিভান্বিত সত্তার ভেতরের একটি কণামাত্র এবং বৃহত্তর জনজীবনে লগ্ন ও বিস্তারিত থাকারই উপলক্ষ মাত্র। ওই সত্তাটি আবার ভারতবর্ষীয় রক্ষণশীল জীবনধারায় মোটেই আগন্তুক নয়। বরং এটি ভারতবর্ষীয় জলবায়ু ও চিদাকাশের অনুকূলে তাঁর অতিস্বাভাবিক ও কাক্সিক্ষত উড্ডয়নই বটে। তারপরও কোথাও যেন মনে হয়, কবি নজরুলের সার্বিক মহামানবিক জীবনঘনিষ্ঠতার তৃষ্ণা, যেখানে অপূর্ব ভঙ্গিতে লীলায়িত তাঁর শৈল্পিক অভিরুচি, বোধ হয়, সঠিক ও গভীর অনুসন্ধিৎসায় রূপায়িত হবার অপেক্ষায় আছে আজও।

দুই

নজরুল-বিষয়ে আরও একটি গভীর অনুধাবনার জায়গা এখানে যে, স্বল্পায়ু সবাক ও সচল জীবনে তিনি এককভাবেই বহুমুখী জীবনযাপনের সুনিপুণ বিন্যাস ও চিহ্ন রেখে গেছেন এই নশ্বর ভুবনের অণু-পরমাণুতে। বিশেষ করে তাঁর বিরহমথিত জীবনের গূঢ়ার্থ তেমন বাক্সময়ভাবে উন্মোচিত হয়েছে কোথাও, কারো রচনায় এমন বলা যাচ্ছে না খুব বেশি। এ বিরহ শুধু নারীঘটিত প্রেমাকাক্সক্ষা বা তার থেকে পতন বা বিচ্ছিন্নতাপ্রসূত অশ্রুবিসর্জন কেবল নয়। সৃষ্টির শুরু থেকে পৃথিবীর বুকে মানবাত্মার জীবননাট্যের সচলতা ও তার পূর্ণ বিয়োগান্তক পরিণতির যে-বিপুল ক্রন্দন ধ্বনিত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী শ্রুত বা অশ্রুতরূপে, এ বিরহ-বেদনা সেদিকেও যেন তর্জনী  নির্দেশ করে অহর্নিশ।

নজরুল একটি গানে উচ্চারণ করেছেন : ‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাব তবু আমারে দেব না ভুলিতে’ …। বাহ্যিকভাবে প্রেমব্যঞ্জনা তথা রোমান্টিক আবহম-িত মনে হলেও এ গানের ভেতরে লুকিয়ে আছে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠপ্রাণ মানবাত্মার অপূর্ণ সাধের সুবিপুল আকুতি ও রোদনের ঘনরাগ। এ তো আদতে মানবাত্মার পরিণতি বিষয়ে অবিনশ্বর চিরব্যাকুল, স্বাধীন অনুভূতির দুর্বার সওয়াল ও আরতি। পৃথিবী নামক সরাইখানায় মানুষ কেন এলো, কেনই-বা ক্ষণিকের বসতি শেষে তাকে হারিয়ে যেতে হয় চিরকালের অন্ধকারে! নজরুলের জীবন-জিজ্ঞাসায় এ এক ব্যাপক উদ্বেলতা যোগ করে বিস্ময় হয়ে আছে বড়। পৃথিবীর প্রতিটি নরনারী এই এক দুর্নিবার বোধে তাড়িত হয়ে গভীর-গভীরতর উপলব্ধিতে মজ্জমান হয় :

তোমাদের পানে চাহিয়া বন্ধু আর আমি জাগিব না

কোলাহল করি সারাদিনমান কারও ধ্যান ভাঙিব না

নিশ্চল নিশ্চুপ

আপনার মনে পুড়িব একাকী গন্ধ বিধুর ধূপ…

চিরন্তন মানবের শাশ্বতবোধের একটি সামগ্রিক নিটোল আখ্যান পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে এখানে, এই উপলব্ধির ভেতরে। এই সারবত্তাকে অবলম্বন করে চির অস্থির, চির সৃষ্টিশীল মানুষের অবয়ব খুঁজে পাওয়া সম্ভব নজরুলের জীবনচরিতে। যে-জীবনচরিতের পরতে-পরতে উদ্ভাসিত হবেন অবিমিশ্র, অপূর্ব, সম্পূর্ণ মানুষ ও সর্বোপরি কবি নজরুল।

তিন

বাঙালির জাতীয় জীবনে কবি কাজী নজরুল ইসলামের (১৮৯৯-১৯৭৬) প্রভাব নিয়ে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে বিস্তর গবেষণা গ্রন্থ, প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বহু প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাও নজরুল-গবেষণায় মনোযোগ নিবদ্ধ করেছে।বাংলা সনের ১২ ভাদ্র নজরুলের মৃত্যুবরণের দিন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তিনি ঢাকায় ইহলোক ত্যাগ করেন। কাজী নজরুলের লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক ও সাম্যবাদী চেতনা বিকাশের পথে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে-যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলেছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার অন্যতম এক মৌল উৎস। একবিংশ শতকের আজকের দিনেও তাঁর চিন্তা ও কবিতা প্রবলভাবে জনসম্পৃক্ত ও প্রাসঙ্গিক। এই জনপদের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী প্রতিবছর ধর্মীয়ভাবে ঈদুল আজহা উদযাপন করে যথাযথ মর্যাদায়। এটি একটি প্রতীকী ধর্মীয় উৎসব। যার মর্মতলে রয়েছে নিজের ভেতরের অশুভ ও পাশবশক্তিকে বিসর্জন দিয়ে সাচ্চা মানবতার বাণী ও তার বাস্তবতাকে উর্ধ্বে তুলে ধরা এবং স্রষ্টার পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি অর্জন করা। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে সেই প্রত্যয় থেকে এসব মানুষেরা যেন ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে। দেখানোপনা আর অর্থবিত্তের জাঁক প্রদর্শনই যেন অনেকের কাছে দিবসটির তাৎপর্য হয়ে উঠেছে। প্রকৃত ধর্মীয় ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্যচেতনা যেন ভেতর থেকে বিদায় নিতে শুরু করেছে ভোগ আর বিলাসিতার লীলায়। আমরা যেন নির্বোধ-নিরীহ পশুকে জবাই করে উল্টো নিজেদের শক্তি ও দাপট প্রদর্শনেই মেতে উঠছি আদিম উল্লাসে। সেই সঙ্গে সময়ে-সময়ে এখানে যুক্ত হয় কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে খুবই বেদনাময় তেলেসমাতি কা-। পশুর মূল্যবান চামড়া নিয়ে একটি অশুভচক্রের কারসাজিতে এটি একেবারে মূল্যহীন বস্তুতে পরিণত হয়।

অথচ এই চামড়া বা এর বিক্রয়লব্ধ অর্থে গরিব ও দুস্থদের রয়েছে পরিপূর্ণ হক বা উত্তম অধিকার। সম্ভ্রান্ত কোরবানিদাতাদের কাছে ওই গরিব মানুষের বিপুল প্রত্যাশা থাকে তা থেকে কিছু হিস্যা পাওয়ার। সেই সঙ্গে এতিম-অনাথালয়েও পশুর চামড়া বা তার বিক্রির টাকা দান করা হয়। কিন্তু এই চামড়া নিয়ে দুর্নীতি ও অসাধুতার কারণে কোরবানিদাতা ও গরিব-দুস্থ উভয়েই চরম বিপন্নতা ও দুঃসময় পার কওে কালে-কালে। নিরীহ পশু ও সেই পশুর চামড়ার উপকারভোগী সাধারণ মানুষের বেদনাভরা মনোভাব যেন প্রকাশ করেছেন কবি ১৯২২ সালের ‘ধূমকেতু’ পত্রিকার ২৬ সেপ্টেম্বর সংখ্যায় মুদ্রিত ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ নামক কবিতায়। ওই দীর্ঘ কবিতার কয়েকটিপ্রাসঙ্গিক পংক্তি এ রকম :

বৃথাই গেল সিরাজ-টিপু-মীর কাশিমের প্রাণ বলিদান,

চ-ী! নিলি যোগমায়ারূপ, বলল সবাই বিধির বিধান।

হঠাৎ কখন উঠল ক্ষেপে বিদ্রোহিনী ঝাঁসি রানি,

ক্ষ্যাপা মেয়ের অভিমানেও এলি নে তুই মা ভবানী।

এমনি করে ফাঁকি দিয়ে আর কতকাল নিবি পূজা?

পাষাণ বাপের পাষাণ মেয়ে, আয় মা এবার দশভূজা।

বছর-বছর এ অভিনয়, অপমান তোর, পূজা নয় এ,

কি দিস আশিস কোটি ছেলের প্রণাম চুরির বিনিময়ে?

অনেক পাঁঠা-মোষ খেয়েছিস, রাক্ষসী তোর যায়নি ক্ষুধা,

আয় পাষাণী এবার নিবি আপন ছেলের রক্তসুধা

দুর্বলেরে বলি দিয়ে ভীরুর এ হীন-শক্তি পূজা

দূর করে দে, বল মা, ছেলের রক্ত মাগে দশভূজা।…

ইসলামি জীবনধারা ও ভারতীয় পৌরাণিক উপাখ্যানের প্রতীকী মিশেলে কবি এখানে যে-বার্তা পৌঁছাতে চান হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে ভারতীয় জনগণের অন্তর্দেশে, তা মোটেই উপলব্ধির বাইরে থাকে না কারো। আনুষ্ঠানিকতার নামে সত্যকে পাশ কাটানোর মনোভঙ্গিকে ধিক্কার জানানোর হয়েছে এখানে নিপুণভাবে, প্রকারান্তরে কোরবানি আর বলির নামে পাশবশক্তিকেই অর্ঘ্য দেয়া হচ্ছে বলে। তাই নির্বাক-নিরীহ পশু বলিদান আর নয়, নিজেদের রক্তদানে শুদ্ধ সময় ও সমাজ নির্মাণের খাস কথাটিই বলা হয়েছে।আজকের দিনের পাঠকেরও মনে হতে পারে, আমরা বুঝি আজও মন ও চেতনার দিক থেকে অন্যরকমের উপনিবেশিত এক দুর্বল জাতি হয়ে আছি আত্মবিস্মৃতির বিভোর গহ্বরে। কতিপয় দুর্বৃত্ত তথা অন্ধকারের শক্তির কারসাজির কাছে আমরা বৃহত্তর মানুষেরা শুভবোধ ও শুভচৈতন্য হারিয়ে জিম্মি হয়ে পড়েছি এবং তাদের অন্যায় উপদ্রব যেন নীরবেই মেনে নিচ্ছি ।

চার

কবি নজরুল আমাদের জাতীয় অনুভূতির সারথি। সত্য ও সুন্দরের পথচলাতে আমাদের কা-ারি। তাঁর কবিতা ও গান আমাদের শুদ্ধচিত্ত হতে যুগে-যুগে প্রেরণা জোগাবে অবিরল ধারায়। জাতির সকল ধরনের সংকটমোচনে আর সামাজিক দুর্বৃত্তশ্রেণির অস্তিত্ব চিহ্নিতকরণ ও নির্মূলে নজরুলের বাণী ও ক্ষুরধার লেখনি আমাদের পথপ্রদর্শক হোক, এখানেই জাতীয় কবিরূপে তাঁর আসল প্রাসঙ্গিকতা।