ভরাট হলো সেই গর্ত
সুপ্রভাত ডেস্ক »
নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় ফুটপাত ধরে হাঁটার সময় নালায় পড়ে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে এক শিশু। শনিবার বিকেলে নগরের পাঠানিয়া গোদা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার ১ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, ফুটপাত দিয়ে দুই নারীর সঙ্গে একটি শিশু হাঁটছে। একপর্যায়ে সাফা মারওয়া ইলেকট্রনিকস নামের একটি দোকানের সামনের উঁচু ফুটপাত থেকে নিচু ফুটপাতে নামার সময় হঠাৎ গর্তে পড়ে যায় শিশুটি। পরে দুই নারীকে শিশুটিকে টেনে ওপরে তোলেন। এ সময় আশপাশের মানুষকে সেখানে জড়ো হতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পরই শিশুটিকে নিয়ে দুই নারী চলে যান। তাদের নাম-পরিচয় জানা ও তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে চান্দগাঁও ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এসরারুল হক একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ড্রেনটি উঁচু হওয়ার কারণে এর সামনের রাস্তাটি নিচু হয়ে আছে। এ কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটছে বলে মনে হয়েছে।
নগরীর উন্মুক্ত নালা ও খালগুলো রীতিমতো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। এখানে পড়ে একের পর এক মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটছে। গত বছর জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীতে ‘অরক্ষিত’ খাল-নালায় পড়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত পাঁচ জনের, এখনও নিখোঁজ রয়েছেন একজন।
২৫ আগস্ট নগরীর মুরাদপুর এলাকায় হাঁটার সময় পা পিছলে নালায় পড়ে যান সবজি ব্যবসায়ী ছালেহ আহমদ। এরপর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন তিনি। এখনও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় নালায় পড়ে মৃত্যু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শেহেরীন মাহমুদ সাদিয়ার। তারপর গত ৩০ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে নগরীর কাজির দেউড়ী স্টেডিয়াম সংলগ্ন ফুটপাত ধরে হাঁটার সময় নালায় পড়ে পা ভেঙে যায় কলেজছাত্র ইয়াসিন আরাফাতের।
গেল ৬ ডিসেম্বর নগরীর ষোলশহর এলাকায় খালে খেলনা তুলতে গিয়ে নিহত হয় কামাল হোসেন নামের এক শিশু। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষকে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে খালে নিরাপত্তা বেষ্টনী ও নালায় স্ল্যাব বসানোর কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
সেই গর্তটি ভরাট করা হলো
নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় অভিভাবকের সঙ্গে ফুটপাত ধরে হাঁটার সময় গর্তে পড়ে যায় এক শিশু। ওই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পড়ে যাওয়া স্থানটি ভরাট করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।
শনিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনার পর রোববার বিকেলে সে স্থানে ঢালাইয়ের মাধ্যমে ভরাট করে দেয় চসিক।
রোববার বিকেলে ৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এসরারুল হক বলেন, শিশুটি গর্তে পড়ে যাওয়ার স্থান পরিদর্শন করে সেটি ভরাট করে দিয়েছি। এখানে স্ল্যাব ছিল।
তিনি আরও বলেন, চান্দগাঁও এলাকায় এরকম আর কোনো গর্ত আছে কি না তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। সিঅ্যান্ডবি মোড়ে রাস্তার ওপর এমন একটি গর্ত আছে। সেখানে কাপড় দিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। খবর নিয়ে জানতে পেরেছি এটি বিটিসিএল তাদের কাজের জন্য খুঁড়েছে। দ্রুত এটি ভরাট করতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।
নালায় পড়া ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার
নালায় পড়ে যাওয়া কাজল মিয়া (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
রোববার দুপুরে তাকে উদ্ধার করা হয়। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকার নালায় পড়ে যান তিনি।
কাজল মিয়া কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার জাফর আহমেদের ছেলে। বহদ্দারহাট ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মো. বাহার উদ্দিন বলেন, ‘নালায় এক ব্যক্তি পড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে যাই। প্রায় ২০ মিনিট চেষ্টা চালিয়ে পড়ে যাওয়া ব্যক্তিকে নালা থেকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার ব্যক্তিকে পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।’ স্থানীয় লোকজন জানায়, ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় লোকটি নালায় পড়ে যায়। নালাটির সংস্কারকাজ করার পর ভালোভাবে স্ল্যাব বসানো হয়নি। এ কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে।