নিজস্ব প্রতিবেদক »
মাঝারি ধরনের এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই নগরীর বিভিন্নস্থানে জমেছে হাঁটুপানি। এতে দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। স্কুলফেরত শিশুদের নিয়ে বেকায়দায় পড়তে হয় অভিভাবকদের। গতকাল শনিবার নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
দেখা যায়, নগরীর পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা, কাতালগঞ্জ, ষোলশহর ২ নম্বর গেট, চকবাাজার কাপাসগোলা রোড, বাকলিয়ার কোরবানিগঞ্জ ও কোতোয়ালীর জুবলী রোডের তিনপুলের মাথা, এনায়েতবাজার শাহী জামে মসজিদ ও মহিলা কলেজ এলাকাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় হাঁটুপানি জমে যায়।
স্থানীয় লোকজন বলছে, নগরীর খালগুলো বর্জ্যে ঠাসা। খালের পাড়ে রিটের্নিং ওয়াল নির্মাণের কারণে পানি নামার পথগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারণে সহজেই পানি নামতে পারছে না। বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে।
চকবাজার-কাপাসগোলা রোড এলাকার ব্যবসায়ী হাসান উদ্দিন বলেন, দুপুরের আগে মাঝারি বৃষ্টিতে রোডে পানি উঠছে। এক-আধ ঘণ্টার বৃষ্টিতে যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে পুরো বর্ষাকাল কি হবে।
নগরীর মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা আমিন বলেন, ‘বৃষ্টিতে মুরাদপুর-অক্সিজেন সড়কের সংগীত, হামজারবাগ, আতুরার ডিপো ও রৌফবাদসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি জমে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। সংগীত থেকে জাঙ্গালপাড়ার অভ্যন্তরীণ সড়কটি কাদাপানিতে একাকার হয়ে উঠেছে। যে কারণে এই সড়ক দিয়ে সামান্য বৃষ্টিতেও হাঁটাচলা কষ্টকর হয়ে পড়ে।’
ফোনে কথা হয় আগ্রাবাদের গোসাইলডাঙ্গা এলাকার শিক্ষিকা কাকলী বড়–য়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, বৃষ্টির পানিতে প্রধান সড়কে পানি উঠলেও অলিগলিতে ঘণ্টাখানেক ধরে পানি ছিল। যার ফলে স্কুল ফেরত শিক্ষার্থীরা কিছুটা দুর্ভোগে পড়ে। নালাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না রাখাতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
৩৫ নম্বর বকসিরহাট ওর্য়াড কাউন্সিলর নূরল হক বলেন, বৃষ্টির সময় হালকা পানি উঠলেও তা নেমে যায়। নিয়মিত নালা পরিষ্কার রাখতে ওর্য়াড পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে বলেছি।
২২ নম্বর এনায়েত বাজার ওর্য়াড কাউন্সিলর মোহাম্মদ সলিম উল্লাহ বলেন, এনায়েত বাজারের তিনটি এলাকায় দীর্ঘক্ষণ ধরে জলাবদ্ধতা ছিল। এতে মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। দীর্ঘদিনের ময়লা ও আবর্জনা জমে থাকাতেই নালাগুলো জ্যাম ছিল। যার ফলে বৃষ্টির পানি নামতে পারেনি। বর্ষায় হয়তো আরো বড় ধরনের জলাবদ্ধতার শিকার হতে হবে।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া দপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, শনিবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত আমবাগান অফিস রের্কড অনুসারে ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৭ মিলিমিটার।
পতেঙ্গা অফিসের রের্কড মতে ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এভাবে আগামী ৩ থেকে ৪ দিন পর্যন্ত থেমে থেমে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে নগরীর জলাবদ্ধতার বিষয়ে জানতে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোবারক আলী ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামসকে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নগর পরিকল্পনাবিদ মো. জহির উদ্দিন বলেন, নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প কর্মকর্তারা কাজ করছেন। আমার জানামতে ৩৬টি খালের মধ্যে প্রায় খালের উন্নয়নের কাজ চলমান। এ সময় সাময়িক সমস্যা হতে পারে। তবে কাজের অগ্রগতিও কিছুটা আমরা দেখতে পাচ্ছি।