নিজস্ব প্রতিবেদক »
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আজ রোববার। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়াও বিভিন্ন দলের প্রার্থী রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার আভাস দিয়েছেন।
এদিকে বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। শনিবার থেকে তারা দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন করছে।
কঠোর অবস্থানে নির্বাচন কমিশন
নির্বাচন কমিশন এবার নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে যাবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গত শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে নির্বাচনি প্রচারণা। এবার এক হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ২৮টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীসংখ্যা এক হাজার ৫৩৪ জন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন ৪৩৬ জন।
নিরাপদ ভোট নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
শান্তিপূর্ণ নির্বাচনি পরিবেশ বজায় রাখতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আনসার সেনাবাহিনীসহ সামরিক ও বেসামরিক আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। শনিবার বিকালে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী নগরীর বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি করতে দেখা যায়। ২৯ ডিসেম্বর থেকে মাঠে নেমেছেন তারা। এছাড়া দুর্গম উপকূলীয় অঞ্চলে নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে নৌবাহিনী। আর বিমানবাহিনী দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নির্বাচনী সহায়তা দেবে। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে নির্বাচনী সহায়তা প্রদানে বিমানবাহিনীর প্রয়োজনীয়সংখ্যক হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যৌথ সমন্বয় সেল স্থাপন করা হয়েছে বলে সূত্রে জানান।
কেন্দ্র ৪২ হাজার ২৫টি
এবারের নির্বাচনে মোট ৪২ হাজার ২৫টি কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে অপেক্ষাকৃত দুর্গম ২ হাজার ৯৬৪ কেন্দ্রে শনিবার ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। আর বাকি ৩৯ হাজার ৬১ কেন্দ্রে আজ রোববার সকালে ব্যালট পেপার পৌঁছানো হবে।
ব্যালট পেপার পরিবহন ও বিতরণে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ভোটের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে সকাল ৬টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করবেন। এছাড়া সকালে ব্যালট পেপার পরিবহনের বিষয়ে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেবে বলে জানা যায়।
বেশি প্রার্থী আওয়ামী লীগের
এবার নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী আওয়ামী লীগের। দলটির প্রার্থীর সংখ্যা ২৬৬। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির ২৬৫, তৃণমূল বিএনপির ১৩৫, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ৫৬ জনসহ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ২৭টি রাজনৈতিক দলের মোট প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৪ জন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন আরও ৪৩৬ জন। ফলে ১ হাজার ৯৭০ জনের নাম থাকবে ব্যালট পেপারে। যদিও জাতীয় পার্টিসহ বেশ কয়েকটি দলের কয়েকজন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দের পরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
১৮৬ বিদেশিকে পর্যবেক্ষণের অনুমতি
নির্বাচন দেখার জন্য যেসব বিদেশি আবেদন জানিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ১৮৬ জন পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিককে অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাদের মধ্যে ১২৭ পর্যবেক্ষক ও ৫৯ জন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কর্মী। এ ছাড়া নির্বাচন দেখতে দেশি ২০ হাজার ৭৭৩ পর্যবেক্ষককে অনুমোদন দিয়েছে ইসি। তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে ৪০টি পর্যবেক্ষণ সংস্থার ৫১৭ এবং স্থানীয়ভাবে ৮৪টি পর্যবেক্ষণ সংস্থার ২০ হাজার ২৫৬ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন।
২২ সদস্যের মনিটরিং সেল
নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে ২২ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন করেছে ইসি। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, মনিটরিং সেল শনিবার সকাল ৮টা থেকে ৯ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত মোট ৭২ ঘণ্টা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।