দেশ বিরোধী উস্কানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সুপ্রভাত ডেস্ক »

দেশ বিরোধী ধ্বংসাত্মক আন্দোলন, সমাবেশ ও উস্কানিদাতাদের  গ্রেপ্তার করা হবে হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।  তিনি বলেছেন, অপরাধী ও অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত এবং দেশ বিরোধী ধ্বংসাত্মক আন্দোলন, সমাবেশ ও উস্কানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অষ্টম সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও অপরাধ কর্মকাণ্ড রোধকল্পে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।”

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে যেন থাকে সে বিষয়টি সভায় সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয় বলে তুলে ধরেন উপদেষ্টা।

এ ক্ষেত্রে গোয়েন্দা নজরদারি, টহল বাড়ানোর পাশাপাশি চেকপোস্ট বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, সব কিছু নিরাপদ রাখতে, ঈদে বিশৃঙ্খলা এড়াতে আবাসিক হোটেল ও বস্তিতে অভিযান পরিচালিত হবে।

ঈদের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বা হবে সে বিষয়ে সার্বিক একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

এছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেওয়া একগুচ্ছ নির্দেশনা তুলে ধরেন উপদেষ্টা।

•• ঈদের সময় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ অধিদপ্তর এবং প্রযোজ্য অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। সকল কন্ট্রোল রুম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট অপারেশন সেন্টারের (০১৩২০০০১২২৩) সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে।

•• ঈদের সময় ট্রাফিক ও যানজট নিয়ন্ত্রণ: যমুনা সেতু, পদ্মা সেতু এবং ফ্লাইওভারসহ টোলপ্লাজাসমূহে যানজট নিরসনে ইটিসিসহ (ইলেকট্রনিক টোল সংগ্রহ) দ্রুত টোল আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

•• অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহনকারী বা যাত্রীবাহী যানবাহন ব্যতীত স্থলবন্দর ও নৌবন্দরসহ যে কোনো জায়গা থেকে ছেড়ে আসা নির্মাণসামগ্রী বহনকারী ও লম্বা যানবাহন ঈদের পূর্বের তিন দিন এবং পরের তিন দিন যেন মহাসড়কে চলাচল করতে না পারে বা নৌ-রুটে ফেরি পারাপার করতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

•• ঈদ উপলক্ষে যাত্রী পরিবহন নির্বিঘ্ন করার জন্য সড়ক, নৌ ও রেলপথে যাতে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই না করা হয় ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা হয় সে লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগ/দপ্তর/সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং যাত্রী সাধারণকে সচেতন থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।

•• চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতকারীদের কর্মকাণ্ড তথা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডরোধে ইউনিফর্মধারী পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য মোতায়েন, বিশেষ বিশেষ রাস্তায় ও মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন, টাকা স্থানান্তরে মানি এস্কর্ট প্রদান, জাল টাকার বিস্তার রোধ ও শনাক্তকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

•• ঈদের ছুটির পূর্বেই গার্মেন্টস/শিল্পকারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ নিশ্চিত করা। অন্যথায় গার্মেন্টস/কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গার্মেন্টস কারখানা, অন্যান্য শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী ও ইন্ধনদাতা মালিক, শ্রমিক এবং বহিরাগতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

•• নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা। ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট ‘জিরো টলারেন্স’। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধর্ষণসহ সকল ধরনের নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ যাবৎ নারীর প্রতি যত সহিংসতা হয়েছে সেগুলোর তালিকা করে দ্রুত তদন্ত সম্পন্নপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ঘটে যাওয্য ধর্ষণের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা এবং কঠোর শাস্তির আওতায় আনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হযেছে।

•• এছাড়া ধর্ষণ মামলার বিচার কেবল দ্রুতই নয়, বিচারটা যাতে নিশ্চিত ও যথাযথ হয় ব্যবস্থা নিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন কঠোর করা হচ্ছে। তাছাড়া সভায় মাদকের অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।