মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, আওয়ামী লীগের জন্ম থেকেই ষড়যন্ত্র চলেছে। এই ষড়যন্ত্রগুলো সাময়িক সফল হলেও কখনো আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব হয়নি। কারণ আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস জনগণ। জনগণকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ বার বার ক্ষমতায় এসেছে। আমরা একটি কঠিন সময় অতিক্রান্ত করছি। দেশ বিদেশে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে না পারলে আমরা শুধু নই সমগ্র বাংলাদেশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে পাল্টা আঘাত হানতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের বিজয় অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, এজন্য আমাদের এখন কাজ শুরু করতে হবে। সংগঠন যদি শক্তিশালী না হয় এবং ভিত্তি সৃদৃঢ় না থাকে তাহলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা যাবে না।
তিনি গতকাল বুধবার সকালে ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নগরীর টিআইসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।
আ জ ম নাছির আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ বছর ধারাবাহিক ক্ষমতায় থেকে জনগণকে যা দেবার তার সবকিছুই দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের তিন কোটি উপকারভোগী পরিবারকে নানাভাবে প্রণোদনা দিয়েছেন এবং সামাজিক সুরক্ষা বলয় নিশ্চিত করেছেন। আমরা এই উপকারভোগী পরিবারকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে দলের পতাকাতলে নিয়ে আসতে পারলে কোন অপশক্তি আওয়ামী লীগের বিজয়কে ঠেকাতে পারবে না।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, পরনিন্দা ও পরচর্চা বাদ দিয়ে আত্মসমালোচনা করুন এবং নিজের আয়নায় নিজের মুখ দেখুন। থানা, ওয়ার্ড এবং মহানগর পর্যায়ে যিনি যে দায়িত্বে আছেন সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেছেন, দেশ বিভাগের পর পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরপরই বঙ্গবন্ধু বুঝে গিয়েছিলেন এই নতুন ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রে কখনো বাঙালি জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য তিনি একটি স্বাধীন রাষ্টের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্নের বুনিয়াদ হলো ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা।
তিনি আরো বলেন, ৬ দফাকে ১ দফায় পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাঙালি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদ্বয় ঘটে। বঙ্গববন্ধুর ইচ্ছে ছিল এই দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করা। কিন্তু ৭১ এর পরাজিত শক্তি এবং পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর আরাধ্যের সোনার বাংলাকে আবারো পাকিস্তান বানানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। ষড়যন্ত্রকারীদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং তারই নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উপদেষ্টা সফর আলী, নুর মোহাম্মদ চৌধুরী, বেলাল আহমদ, ফিরোজ আহমদ, সাহাব উদ্দীন আহমদ, সামশুল আলম, সাইফুল আলম বাবু, কাজী হুমায়ুন আলম মুন্না, দিদারুল আলম মাসুম প্রমুখ।
সভার শুরুতে ডা. মো. আফছারুল আমীন, আব্দুল আহাদ ও অমল মিত্রের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয় এবং ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবসের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি