সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক
বৃষ্টি মুখর দিনে বাংলাদেশ দল কাটিয়েছে হোটেলে বিশ্রাম করে। বাতিল হয়েছে অনুশীলন। কিন্তু লিটন দাসকে আসতেই হয়েছে। কারণ, তিনি যে এখন সাধারণ কোনো ক্রিকেটার নন, ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ টেস্টের নেতৃত্বের ভার তার কাঁধে। সেই দায়িত্বভারের প্রথম পরীক্ষা হয়েছে সংবাদমাধ্যমের সামনে। সাবলীল কিন্তু ঝাঝালো জবাবে সেই সংবাদ সম্মেলনে লিটন লেটার মার্ক পেয়েছেন বলাই যায়। সাকিব আল হাসান ইনজুরিতে থাকায় বাংলাদেশের ১২তম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা হবে লিটনের। লাল-সবুজের জার্সিতে ৩৮টি টেস্ট খেলা লিটনের সামনে গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলনে প্রথম প্রশ্ন ছিল, এভাবে অনেক সংবাদ সম্মেলন করেছেন, কিন্তু টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে এভাবে আসা কি বিশেষ কিছু? স্বল্প জবাবে লিটন বুঝিয়ে দিয়েছেন এর মাহাত্ম্য, ‘বিশেষ কিছু না। এটা তো অবশ্য একটা ভালো লাগার ব্যাপার কাজ করে। টেস্ট ক্রিকেটকে সবাই প্রাধান্য দেয়। টেস্ট ক্রিকেটার হওয়াটাই অনেক বড় বিষয়। তার মধ্যে দেশের হয়ে অধিনায়কত্ব করা এটা তো অবশ্যই গর্বের বিষয়।’ লিটন বোঝাতে চেয়েছেন যেখানে টেস্ট খেলাটাই বড় কিছু সেখান নেতৃত্ব দেওয়াতো আরও বড় কিছু! ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের এই যুগে এখনো ক্রিকেটারদের কাছে টেস্ট ক্রিকেট যেন স্বপ্নের নাম। ১৪ জুন মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস করতে নামবেন লিটন। অধিনায়ক হিসেবে লিটনের গায়ে জড়ানো থাকবে ব্লেজার। এমন দৃশ্য নিয়ে কি লিটন অনুভব করেছেন কখনো? এমন প্রশ্নে লিটন বনে যান বাস্তববাদী!
‘এভাবে (ব্লেজার পরে টস করতে যাওয়া) কখনো চিন্তা করা হয়নি আসলে। দেখা যাক টস করতে গেলে অনুভূতিটা যদি ওভাবে আসে তাহলে আসতেই পারে।’
ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে টেস্টে লিটন ছিলেন সাকিবের ডেপুটি। সাকিবের অনুপস্থিতিতে চলে এলো নেতৃত্বের ভারও। দায়িত্ব নিতে লিটনের মনে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল? লিটন জানান, খেলা চলাকালীন অনেক সময় সাকিব মাঠের বাইরে যাওয়ায় তখন নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাই মনে কোনো সংশয় ছিল না।
‘এরকম কোনো কিছুই (সংশয়) ছিল না। এমনও হয়েছে যে সাকিব ভাই মাঠের বাইরে গেছেন, তখন আমাকে ১-২ ওভার হলেও অধিনায়কত্ব করতে হয়েছে। এটা নিয়ে তাই চিন্তা হয়নি।’
ভারতের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১০ জুন সাদা পোশাকে লিটনের পথচলা শুরু হয়। ৮ বছর পর ২০২৩ সালের ১৪ জুন মাঠে নামবেন নেতা হিসেবে। ৩৫.৬৭ গড়ে রান করা লিটনের টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে স্বপ্নটা অনেক বড়। ডানহাতি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জানান, উত্থান-পতনে মোড়ানো ছিল তার পথচলা।
লিটন বলেন, ‘জার্নিটা খুব একটা সহজ ছিল না। উত্থান-পতন সবসময় ছিল। সামনেও থাকবে। আমি এটাতে বিশ্বাস করে আপনি যদি ব্যর্থ না হন তাহলে শিখতে পারবেন না। আমি সবসময় ব্যর্থতাকে স্বাগতম জানাই। ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে আমি কি ভুল করতেছি শুধরাতে পারবো।’
এরপরেই লিটন বলেন টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে তার স্বপ্নের কথা, ‘টেস্ট ক্রিকেটটা হচ্ছে অবশ্যই গর্বের খেলা। আমি সবসময় অনুভব করি এটা গর্বের খেলা। দেশের হয়ে খেলাটাই অনেক গর্বের, তার মধ্যে টেস্ট ক্রিকেট। এটা নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমার লক্ষ্য অনেক বড়। আমি আমার শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করবো সবসময়।’