নিজস্ব প্রতিবেদক
সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, দেশের দায়িত্বে শিক্ষিত মেধাবি প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। এই যুব সমাজকেই হতে হবে দেশ গড়ার কারিগর। দেশের প্রতিটি স্থানে মেধাবি ও শিক্ষিত প্রজন্মকে নেতৃত্ব দিতে হবে। তাহলেই দেশ বদলাবে।
তিনি গতকাল শনিবার দুপুরে নগরীর পতেঙ্গায় চিটাগং বোট ক্লাবে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামের বেসরকারি চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির (সিআইইউ) সমাবর্তন-২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে সমার্বতনের মধ্যে দিয়ে দেশের অন্যতম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী গ্রাজুয়েশন শেষ করেছে। আমাদের শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলে হবে না। শিক্ষার ভ্যালু থাকতে হবে। আমাদের মেধাবি প্রজন্ম গ্রাজুয়েশন শেষ করে থেমে নেই। তারা ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন উন্নত দেশে মেধার অবস্থান জানান দিচ্ছে।
আজকে এই মেধাবি প্রজন্ম শিক্ষিত হওয়ার পেছনে আমাদের শিক্ষকদের অবদান অনেক বেশি। আজকের দিনে আমাদের সন্তানদের মেধাবী প্রজন্ম গড়তে প্রতিটা মা-বাবা কিংবা অভিভাবকেরা শ্রম দিচ্ছে, এটি আমাদের জন্যে গর্বের।’
অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময়ে দেশের মানুষ অধিকার হারিয়েছেন। বর্তমানে স্বৈরাচারমুক্ত হয়ে দেশের মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে যাচ্ছে। দেশের মানুষের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকার নানা দিকে সংস্কার করার চেষ্টা করছে। আমরা আশা করছি, আজকের এই যুব মেধাবী প্রজন্ম দেশের সংস্কারে পাশে থেকে একটি সুন্দর দেশ উপহার দেবেন।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন শিল্পগ্রুপ ইয়ংওয়ান করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কিহাকং বলেন, ‘আমি যখন কোরিয়া যায়, আমার বন্ধু ও প্রতিবেশীদের কাছে আমি বাংলাদেশী হিসেবে পরিচিত। বিশেষত চট্টগ্রামের মানুষের কারণে আমরা সক্ষমতা পেয়েছি। আজ আমাদের প্রতিষ্ঠানে লাখো বাংলাদেশি মেধাবি প্রজন্ম কাজ করছে। আগামীতেও কাজ করবে। আমরা চাই, এভাবেই কোরিয়া ও বাংলাদেশের সম্পর্কের মধ্যে শিক্ষিত যুব সমাজ সেতুবন্ধন তৈরি করবে।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমি চাই প্রত্যেকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। মানবিক মানুষ হোক। কারণ এসব মানুষের ওপর আমাদের আগামি প্রজন্ম নির্ভর করবে। তাই আজকের এই যুব সমাজকে বলবো, আপনারা আগামিতে আমাদের জন্য সুখবর নিয়ে আসবেন।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি জুলাই আন্দোলনের সেই বীর সন্তানদের স্মরণ করছি যারা অন্যায়ের প্রতিবাদী হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৭১ সালের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করছি যাদের কারণে আমরা এই দেশ উপহার পেয়েছি।’
বর্তমানর শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, আজকের এ মেধাবি প্রজন্ম দেশের প্রতিটা বিষয়ে চিন্তা করে দেশের ইতিবাচক ভ’মিকায় এগিয়ে আসবে। এটি আমি প্রত্যাশা করি।’
সিআইইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীর মোহাম্মদ নুরুল আবসারের সভাপতিত্বে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরুন আখতার, সিআইইউর প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্ট অ্যাডুকেশন, সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপম্যান্ট ট্রাস্ট (ইসটিসিডিটি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকারিয়া খান, সিআইইউ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান লুৎফে এম আইয়ুব, প্রফেসর মনজুর কাদের প্রমুখ।
এসময় বক্তারা গ্রাজুয়েটদের কর্মজীবনে নিজেদের প্রজ্ঞা মেধা দিয়ে সফলতা কামনা করেন।
সিআইইউ’র বিভিন্ন অনুষদের মোট ২ হাজার ১৮৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। তারমধ্যে ১ হাজার ৪৫২ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রকৌশল, আইন এবং লিবারেল আর্টস অনুষদ থেকে পাস করা স্নাতক এবং ৭৩৭ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী। অনুষ্ঠানে ১৪ জন শিক্ষার্থীকে তাদের স্ব স্ব প্রোগ্রামে অসামান্য কৃতিত্বের ফলস্বরূপ ‘টপ অ্যাচিভার্স’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।