চবি প্রতিনিধি »
দেশব্যাপী সনাতন ধর্মানুসারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রতিবাদী আরতি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ভাস্কর্যের সামনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অসাম্প্রদায়িক শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে এটা আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।
উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের নাগরিকদের মাঝে কোন ভেদাভেদ নেই। যখনি দেশ একটি ভালো সময়ে যায়, সুন্দরের আবাহন করতে চায়; তখনি সাম্প্রদায়িক শক্তি হীন ছোবল হানে। কুমিল্লার ঘটনায় আমরা মর্মাহত হয়েছি। কোন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিই নিজেদের ধর্মালয়ে অন্যধর্মের উপকরণ রাখে না। তবুও বারবার এগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটছে। একত্রিত হয়ে আমরা সকল হীন শক্তিকে লীন করে দিতে পারি। হিন্দু, মুসলমানসহ সব ধর্মের মানুষ একই মায়ের সন্তান। আমাদের মাঝে যেন কেউ বিভেদ সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপউপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছেন যারা অসাম্প্রদায়িক তারা মানুষ নন। আমরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ব। তাই সংবিধানের শুরুতেই রাখা হয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতা, হিন্দুদের দুর্গাপূজাও তারই অংশ। কিন্তু কিছু লোক ধর্মের দোহাই দিয়ে অপরাজনীতি করে বার বার হামলা করে পাকিস্তানি বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এদেরকে প্রতিহত করতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে।
চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এমদাদুল হক বলেন, এদেশের সম্প্রীতি কেউ নষ্ট করতে পারে না। অচিরেই সারাদেশ থেকে অসাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ সমূলে উৎপাটন করতে হবে। যারা হামলার শিকার হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে আমাদের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িত সকলের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনের দাবি জানাচ্ছি।
বক্তৃতা পর্ব শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিনয়, কবিতা এবং নৃত্য পরিবেশন করেন। সঙ্গীত পরিবেশন করেন চবি শিক্ষার্থীদের ব্যান্ড অজানা উড়ন্ত বস্তু।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আব্বাস ও নন্দিনী কর্মকার প্রাচীর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ আরতিতে আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল আলম, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক সিরাজ উদ দ্দৌল্লাহ, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী এসএম খসরুল আলম কুদ্দুসী, বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরী, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খন্দকার আলী আর রাজি, সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু প্রমুখ।