সুপ্রভাত ডেস্ক »
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া তরুণদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার। কারণ, তরুণ প্রজন্ম যে কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেছে, তার প্রতি সম্মান রেখেই আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ পেয়েছি।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের আয়োজনে ইডেন মহিলা কলেজ অডিটোরিয়ামে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে নিহত ১০ তরুণ-তরুণীর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের উদ্দেশে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এই পরিবারগুলোর সন্তানরা ছিল গুণী ও অপার সম্ভাবনাময়। আমরা তাদের জীবনের গল্প শুনে জেনেছি, কীভাবে তারা নিজেদের জীবন গুছিয়ে নিচ্ছিলেন এবং দেশের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়েছিলেন। বাবা-মা কষ্ট করে সন্তানদের বড় করেছেন। আজ সেই সন্তানরা ফ্যাসিবাদী শক্তির গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে। কিন্তু তাদের অকালমৃত্যুই আমাদের নতুন করে বাংলাদেশ গড়ার প্রেরণা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, করোনাকালে কিংবা ডেঙ্গু মোকাবিলায়, এমনকি ধান কাটার মৌসুমেও তরুণ স্কাউটরা সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। রক্তদান, চিকিৎসাসেবা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে মাঠে গিয়ে কৃষকের কাজেও তারা সহায়তা করেছে। ভিডিওতে আমরা দেখেছি, গুলির মুখে দাঁড়িয়েও এরা মানবতার কাজ করে গেছে। এরা সত্যিকারের মানবতার দূত।
স্কাউট আন্দোলনের ভূমিকা উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, স্কাউট কেবল সহপাঠ্য কার্যক্রম নয়, বরং সুনাগরিক, সচেতন নাগরিক এবং একটিভ সিটিজেন তৈরি করার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। স্কাউট তরুণদের দক্ষতা বাড়ায়, দেশকে ভালোবাসতে শেখায়। নিজেদের গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশ গড়ার পথও তৈরি করে দেয়।
ড. আবরার জানান, এ ধরনের কার্যক্রমকে গুরুত্ব দিয়ে মন্ত্রণালয় প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করছে এবং প্রয়োজনে প্ল্যানিং কমিশনে তা পাঠানো হবে। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, যতটুকু সম্ভব, সরকার এ ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে কাজের উদ্দেশ্যে বের হলে দেয়ালে লিখন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় তরুণ প্রজন্মের চাহিদা কী ছিল। তারা কী ধরনের বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। সেই বাংলাদেশ যেন আমরা সবাই মিলে গড়ে তুলতে পারি। যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন বা অঙ্গহানি স্বীকার করেছেন, তাদের ত্যাগকে শ্রদ্ধা জানিয়েই আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপচার্য ও বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের সভাপতি প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এহসানুল হক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব রেহেনা পারভীন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) ও বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের সম্পাদক প্রফেসর ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল এবং বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের সদস্য সচিব মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।