-
তৈরি করা হয়েছে ৫৩৯টি প্লট
-
উৎপাদনের অপেক্ষায় আরো ৫ শিল্প প্রতিষ্ঠান
-
বর্তমান বিনিয়োগ ৫৫ মিলিয়ন ডলার
রাজু কুমার দে, মিরসরাই »
চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় উপযুক্ত পরিবেশে দেশের সবচেয়ে বড় বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মিরসরাইয়ের ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে’। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে মাত্র ১৪ কিলোমটার দূরে নির্মল পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত ‘মিরসরাই বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল’টি প্রথম দেখাতেই বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে। এটির আয়তন ১১৫০ একর। ইতোমধ্যে ৫৩৯টি প্লট তৈরি করা হয়েছে। বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৭৩টি প্লট। উৎপাদনে রয়েছে ৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। উৎপাদনের অপেক্ষায় রয়েছে আরো ৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। পরিবেশবান্ধব এই অর্থনৈতিক অঞ্চলটি দেশী বিদেশীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের একটি বড় সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
জুলাই মাসে বেপজার দেয়া তথ্য মতে জানা গেছে, ২০১৮ সালে মিরসরাই জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি বৃহৎ শিল্প জোন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয় বেপজা। ২০১৯ সালে বেজা থেকে ১ হাজার ১১৫০ একর জমি বুঝে পায় প্রতিষ্ঠানটি। ২০২০ সালে জমি উন্নয়ন কাজ শুরু করা হয়। পরবর্তীতে ৫৩৯টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্লট নির্মাণ করা বেপজা। ইতোমধ্যে ২৭৩টি প্লট বিভিন্ন শিল্প উদ্যোক্তার কাছে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাদের বেপজা ইজেড এলাকা-১ প্লট বরাদ্দ শেষ হয়েছে। ইজেড এলাকা-২ প্লট বরাদ্দ শুরু হয়েছে। ২০২২ সালে প্রথম প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০২৩ সালে উৎপাদন শুরু হয়। দেশে বেপজার ৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মোট আয়তন ২ হাজার ৩৭৩ একর। কিন্তু মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের আয়তন ১১৫০ একর। এটি বেপজার সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল। অর্থনৈতিক অঞ্চলের পাশেই সমুদ্র থাকায় বিনিয়োগকারীদের জন্য যোগ করেছে নতুন মাত্রা। ইতোমধ্যে ৪৫টি উদ্যোক্তা কারখানা স্থাপনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। উৎপাদনে গিয়েছে ৫টি। উৎপাদনের যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে আরো ৫টি কারখানা। নির্মাধানাধীন রয়েছে ২০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে কর্মসংস্থান হয়েছে ৩ হাজার ৬৭৩জন মানুষের। শিল্পজোনটি পুরোপুরি চালু হলে প্রায় ৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশাবাদী বেপজা কর্তপক্ষ। ৪৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত বিনিয়োগ ১৬৬৩ মিলিয়ন ডলার। বর্তমান বিনিযোগ ৫৫ মিলিয়ন ডলার। এখানে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে একটি পরিকল্পিত শিল্পবিপ্লব। মূলত ইপিজেড শতভাগ রপ্তানিকারক হলেও মিরসরাই বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্যোক্তরা উৎপাদিত পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি দেশীয় বাজারে বাজারজাতকরণ করতে পারবে। বিনিয়োগকারীরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সড়ক পথের পাশাপাশি সমুদ্র পথেও পরিবহণ করতে পারবে। এখানে উৎপাদন হবে ড্রোন, চিকিৎসা সরঞ্জামসহ বিভিন্ন বৈচিত্রময় পন্য।
চীনা কোম্পানী ‘কেপিএসটি সুজ’ এর ব্যবসা উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. নাছির রহমান সায়েম বলেন, কেপিএসটি সুজ মিরসরাই বেপজা অর্থনৈনিক অঞ্চলের ইজেড-১ অবস্থিত। আমরা ২০২৩ সালে উৎপাদন শুরু করি। আমরা বেপজা থেকে ৬টি প্লট বরাদ্দ পেয়েছি। এখানে আমরা সু এসেসোরিক্স উৎপাদন করে থাকি। মিরসরাই বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমরা ৮.৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছি। আমাদের উৎপাদিত পণ্য দেশ ও দেশের বাইরে রপ্তানি করা হয়ে থাকে। বেপজা থেকে আমাদের সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি উৎকৃষ্ঠ স্থান হতে পারে।
মিরসরাই বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, মিরসরাইয়ে অবস্থিত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের চেহারা দিন দিন পরিবর্তন হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠান জমি বরাদ্দ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫টি উৎপাদনে গিয়েছে। উৎপাদনের অপেক্ষায় রয়েছে আরো ৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। অবকাঠামো উন্নয়ন চলছে ২০টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের। ৪৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ১ হাজার ৬৬৩ মিলিয়ন ডলার। ইতিমধ্যে ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হয়ে গেছে। শহরের কোলাহলমুক্ত মিরসরাই বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলটি বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই আর্কষণীয় স্থান।