নিজস্ব প্রতিবেদক »
অলংকার মোড় থেকে নিউমার্কেট আসবে সীতাকু- থেকে আসা হোসেন আহমেদ। কিন্তু অলংকার থেকে কোনো গাড়ি পাচ্ছেন না। গ্যাস চালিত একটি টেম্পো এলে অসংখ্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে তাতে উঠার জন্য। শেষ পর্যন্ত দেওয়ানহাট পর্যন্ত হেঁটে এসে বাকি পথ গ্যাস চালিত টেম্পোতে করে নিউমার্কেটে এসেছেন। হোসেন আহমেদের মতো হাজারো মানুষ গতকাল পরিবহন দুর্ভোগে পড়েছে। ডিজেল চালিত গাড়ি রাস্তায় না থাকায় এবং সিএনজি চালিত গাড়িও সংখ্যায় কম থাকায় নগরজুড়ে অঘোষিত ধর্মঘট ছিল গতকাল।
জানা গেছে, শুধু নগরমুখো মানুষ নয়। নগর থেকে ঢাকামুখী মানুষেরও দুর্ভোগ ছিল চরমে। একেখান ঈগল পরিবহনের কাউন্টারের সামনে সকাল সাড়ে ৯টার সময় দেখা যায় যাত্রীদের জটলা। অনেকে কাউন্টারে বসে আছেন। কিন্তু বাসের দেখা নেই। পরবর্তীতে কাউন্টারের লোকজন বললো বাস চলতে বাধা দেয়া হচ্ছে। তাই বাস ছাড়তে দেরি হচ্ছে। অলংকার মোড়ে দেখা যায়, মিরসরাই থেকে আসা উত্তরা পরিবহনের বাসটি আটকে দিচ্ছে পরিবহন শ্রমিকরা। একইচিত্র চয়েস পরিবহনসহ অন্যান্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও। চয়েস ও উত্তরার শেষ কাউন্টার শুভপুর বাসস্টেশন পর্যন্ত। কিন্তু এসব বাসকে নগরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এতে নগরমুখো মানুষে দুর্ভোগে পড়ছে।
একেখান মোড় থেকে জাকির হোসেন রোড পর্যন্ত টেম্পো সার্ভিস ছিল। তেলের দাম বাড়ার কারণে ডিজেল চালিত এসব টেম্পো চলাচল করছে না। একইসাথে এই রুটে কোনে গ্যাস চালিত বাস না থাকায় যাত্রীরা ১২ টাকার ভাড়া শেয়ারে সিএনজিতে ৩০ টাকা দিয়ে জিইসি আসতে হচ্ছে। নগরীর বিভিন্ন রুটে সিএনজি চালিত ও ডিজেল চালিত বাস থাকলেও গতকাল প্রায় সব ধরনের বাসের অপ্রতুলতা ছিল। এরমধ্যে কয়েকটি বাস চলাচল করলেও সেগুলোতে বাড়তি ভাড়া নেয়ার ঘটনা ঘটেছে এবং এতে যাত্রীদের সাথে বাসের হেলপারদের বাগবিত-া হয়েছে। গাড়ির জন্য মানুষ রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়েছিল। আর এই সুযোগে সিএনজি চালক ও রিকশা চালকরা বেশি ভাড়া আদায় করেছে। জিইসি থেকে জামালখান মোড় পর্যন্ত সর্বোচ্চ রিকশা ভাড়া ৫০ টাকা, কিন্তু গতকাল তা ৭০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত চেয়েছে রিকশা চালকরা। একইভাবে রাস্তায় গণপরিবহন শঙ্কট দেখা দেখা দেয়ায় সিএনজি চালকরা ভাড়া বাড়িয়ে আদায় করছে। মোদ্দাকথা দিনভর দুর্ভোগের মধ্যদিয়ে গেছে নগর পরিবহন চিত্র।
উল্লেখ্য, সরকার শুক্রবার দিবাগত মধ্য রাতের পর থেকে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। আর কার্যকর হয় রাত থেকে। এতেই সকাল থেকে পরিবহন ক্ষেত্রে নৈরাজ্য দেখা দেয়।