নগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভায় প্রস্তাব
’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পূর্বে প্রচ্ছন্ন ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের ডালপালা মেললেও তাকে আমলে না আনায় জাতির সর্বনাশা বিপর্যয় ঘটেছিল। বিগত একযুগ ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন সরকারের নজীরবিহীন সাফল্য ও অর্জনে ঈর্ষান্বিত একটি মহল আবারও ’৭৫ এর পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চায়। এরা ঘরে-বাইরে তৎপর এবং বাইরের শত্রুর চেয়ে ঘরের শত্রুরা অনেক বেশি ভয়ংকর। এদের নির্মূলে সকল নেতা-কর্মীদের ঐক্যের ভিত মজবুত করতে হবে।’
গতকাল দারুল ফজল মার্কেটস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী এ কথা বলেন।
দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বিএনপির তথাকথিত এক দফা আন্দোলন একটি অযৌক্তিক ইস্যুবিহীন অরাজনৈতিক মোর্চার নৈরাজ্য সৃষ্টির অপপ্রয়াস। এদের একমাত্র লক্ষ্য বাংলাদেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দেয়া এবং পুরো জাতিকে জিম্মি করে রেখে শৃঙ্খলিত করা। তিনি ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী, ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনোপলক্ষে নগর আওয়ামী লীগ গৃহীত কর্মসূচি সফল করতে দলীয় নেতা কর্মীদের নির্দেশনা দেন। বিশেষ করে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ প্রতিটি ওয়ার্ডে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্প্রচার এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ঘরে ঘরে হাইকোর্টের রায় ও নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় পতাকা উত্তোলনের আহ্বান জানান।
কার্যকরী কমিটির সভায় সর্বসম্মতভাবে গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা হয়, নগর আওয়ামী লীগের সৃশৃঙ্খল সাংগঠনিক কার্যক্রম ও ঐক্যের ভিতকে দুর্বল করার ঘৃণিত উদ্দেশ্যে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে একটি স্বার্থান্বেষী কুচক্রী, দুর্বিনীত, দুষ্টুচক্র হীন অপপ্রচার মূলক ব্যানার টাঙিয়েছে। এরা নিজেদের যোগ্য ও দক্ষ দাবিসহ নানা বিশেষণে ভূষিত করে নগর আওয়ামী লীগের পরীক্ষিতদের হেয় করে কুরুচিপূর্ণ অপপ্রচার নিন্দিত ও ঘৃণিতই শুধু নয়, ঔদ্বত্যপূর্ণ ও দুর্বৃত্তমূলক। তাদের এই কুমনোবৃত্তি শুধু মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নয়, দল ও সরকারের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার গভীর ষড়যন্ত্র।
আপাতত দৃশ্যমান না হলেও দলের ভেতর থেকে যদি কেউ বা কারা ওই ঘৃণ্য দুর্বৃত্তদের ইন্ধন দিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে সনাক্ত করে কঠোর শাস্তিমূলক সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে প্রস্তাবে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, দলীয় ভিত্তিকে দুর্বল ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে কুমতলবে লিপ্ত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
সভায় গৃহীত অপর এক প্রস্তাবে পতেঙ্গা লালদিয়া চরবাসীদের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্থায়ী পুনর্বাসনপূর্বক স্থানান্তরের জন্য সরকারের উচ্চ মহলের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
সভায় এক শোক প্রস্তাবে কিংবদন্তীতুল্য প্রখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব এটিএম শামসুজ্জামান, সাংবাদিক ও লেখক সৈয়দ আবুল মাকসুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করা হয়। অপর এক সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে সংগঠনকে গতিশীল করতে প্রতিটি জাতীয় দিবসের কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়। ৭ মার্চের কর্মসূচি পালন উপলক্ষে জনসমাবেশ পূর্ব নির্ধারিত পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরের পরিবর্তে বিকেল ৩টায় শহীদ মিনার সম্মুখ চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সুনীল কুমার সরকার, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, এম জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বদিউল আল, নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, শফিকুল ইসলাম ফারুক, হাসান মাহমুদ শমসের, অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, মোহাম্মদ হোসেন, হাজী জহুর আহমদ, মাহবুবুল হক মিয়া, জালাল উদ্দিন ইকবাল, দিদারুল আলম চৌধুরী, আবদুল আহাদ, আবু তাহের, জহরলাল হাজারী, নির্বাহী সদস্য আবুল মনসুর, নুরুল আমিন শান্তি, সৈয়দ আমিনুল হক, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, ইঞ্জি. বিজয় কিষাণ চৌধুরী, মহব্বত আলী খান, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, মোহাম্মদ জাবেদ, রোটারিয়ান মো. ইলিয়াস, হাজী বেলাল আহমেদ, মোর্শেদ আকতার চৌধুরী প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি