সুপ্রভাত স্পোর্টস ডেস্ক »
দুর্দান্ত উত্তেজনার ফাইনাল। রোমাঞ্চের পর রোমাঞ্চ। জিততে জিততে হেরে যাওয়ার স্বভাব বদলায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। অথচ শিরোপা ছোঁয়া দূরত্বে ছিল প্রোটিয়ারা। চোকার্স বলে কথা! ১৭ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুললো ভারত। প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা জিতে নিয়েছে নবম আসরের শিরোপা। তীরে এসেও তরী ঢুবেছে দক্ষিণ আফ্রিকার। ৭ রানে ম্যাচ হেরে ভেঙেছে প্রথম বিশ্বকাপ ট্রফি ঘরে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন।
১৭৬ রানের পুঁজি গড়ে প্রোটিয়াদের ১৬৯ রানে থামিয়ে দিল ভারত। কপিল দেব ও মহেন্দ্র সিং ধোনির পর ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো তৃতীয় অধিনায়ক হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন রোহিত শর্মা।
ভারতের জয়ের নায়কদের একজন বিরাট কোহলি। আসর জুড়ে ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী ভারতীয় মহাতারকা নিজেকে মেলে ধরেন ফাইনালে। খেলেন ৫৯ বলে ৭৬ রানের চমৎকার এক ইনিংস। এতে ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছে তার হাতে। যদিও পাওয়ার প্লের মধ্যে ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল ভারত। সেখান থেকে কোহলি ও অক্ষর ৭২ রানের দারুণ জুটি গড়ে ওই ধাক্কা সামাল দেন। ব্যাট হাতে ৪৭ রান করে বড় অবদান রাখেন অক্ষর প্যাটেল।
এরপর কোহলি শিভম দুবেকে সঙ্গে নিয়ে ৩৩ বলে ৫৭ রানের জুটি গড়ে আউট হন। ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারানো ভারত শেষ পর্যন্ত গেল ১৭৬ পর্যন্ত। যেটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে সর্বোচ্চ স্কোর। বল হাতে প্রোটিয়াদের কেশব মহারাজ ৩ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট নেন মার্কো জানসেন, কাগিসো রাবাদা ও আনরিখ নরকিয়া।
১৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১২ রানের মধ্যে জোড়া উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫ বল খেলে ৪ রান করে আউট হন রেজা। মার্করামও ফেরেন ৪ রান করে। এরপর দলের হাল ধরেন কুইন্টন ডি কক ও ক্রিস্টান স্টাবস। ৩৯ রান করে ডি কক ও ৩১ রান করে স্টাবস বিদায় নিলে দল চাপে পড়ে যায়। তবে ক্লাসেন ও মিলার সেই চাপকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন। জয়ের আশা দেখা ভারত মুহূর্তেই ম্যাচ ফসকে যেতে দেখে।
দুটি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ২৭ বলে ৫২ রান করে ক্লাসেন যখন বিদায় নেন, ততক্ষণে মনে হচ্ছিল ভারত ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে। তবে ৪ বলে ২ রান করে মার্কো জানসেন বুমরাহর বলে বোল্ড হলে আবারো ম্যাচে ফেরে ভারত। শেষ ৩ ওভারে ২২ রান প্রয়োজন ছিল। বুমরাহর করা ১৮তম ওভারে আসে মাত্র ২ রান।
শেষ ওভারে ১৬ রান প্রয়োজন ছিল প্রোটিয়াদের। মিলার হার্দিককে লং অফে উড়িয়ে মারলেও সূর্যকুমার অবিশ্বাস্য ক্যাচে ৬ রান আটকানোর পাশাপাশি ৭ম উইকেটের পতন ঘটান। শেষপর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েই মাঠ ছাড়ে ভারত।
বল হাতে আলো ছড়ান আর্শদীপ সিং ও জাসপ্রিত বুমরাহ। ৪ ওভারে ২০ রান দেন আর্শদীপ, বুমরাহ দেন কেবল ১৮। তাদের প্রাপ্তি দুটি করে উইকেট। ভারতের সফলতম বোলার অবশ্য হার্দিক পান্ডিয়া। ৩ ওভারে ২০ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ১৭৬/৭ (রোহিত ৯, কোহলি ৭৬, পান্ত ০, সুরিয়াকুমার ৩, আকসার ৪৭, দুবে ২৭, পান্ডিয়া ৫, জাদেজা ২; ইয়ানসেন ৪-০-৪৯-১, মহারাজ ৩-০-২৩-২, রাবাদা ৪-০-৩৬-১, মার্করাম ২-০-১৬-০, নরকিয়া ৪-০-২৬-২, শামসি ২৩-০-২৬-০)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬৯/৮ (হেনড্রিকস ৪, ডি কক ৩৯, মার্করাম ৪, স্টাবস ৩১, ক্লসেন ৫২, মিলার ২১, ইয়ানসেন ২, মহারাজ ২*, রাবাদা ৪, নরকিয়া ১*; আর্শদিপ ৪-০-২০-২, বুমরাহ ৪-০-১৮-২, আকসার ৪-০-৪৯-১, কুলদিপ ৪-০-৪৫-০, পান্ডিয়া ৩-০-২০-৩, জাদেজা ১-০-১২-০)
ফল: ভারত ৭ রানে জয়ী
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ: বিরাট কোহলি