সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক :
করোনা ভাইরাস অতিমারির জেরে অনিল কুম্বলের নেতৃত্বে আইসিসি ক্রিকেট কমিটি সুপারিশ করেছে, বলের পালিশ রাখার জন্য থুতু এবং লালার ব্যবহার বন্ধ করা হোক। এ নিয়ে ক্রমশ তর্ক-বিতর্ক বাড়ছে। কেউ সমর্থন করছেন, কার মত উল্টো দিকে।
এ দিন ভারতের তারকা স্পিনার আর অশ্বিন বলে দিলেন, থুতু বা লালার ব্যবহার বন্ধ করতে সময় লাগবে। রাতারাতি এত দিনের অভ্যাস বন্ধ করা যায় না। অশ্বিন বলছেন, ‘বলে থুতু লাগানোটা আমার কাছে খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। সময় লাগবে এই অভ্যাস পাল্টাতে। তবে এটা ঠিক যে, এর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও আমাদের করতে হবে।’ তার নতুন আইপিএল দল দিল্লি ক্যাপিটালসের সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে আলাপচারিতায় অশ্বিন আরও বলেন, মাঠের মধ্যে উৎসবের ভঙ্গিও করোনা ভাইরাসের জেরে পাল্টে যাবে। ‘আমাদের সত্তর বা আশির দশকের সেই উৎসব ভঙ্গিতে ফিরে যেতে হবে। যখন উইকেট নেওয়ার পরে সকলে দূরে দূরে থেকে হাততালি দিয়েই কাজ সারত। হাই-ফাইভ বা রিস্ট পাম্প অনেক পরে এসেছে খেলায়।’
করোনার প্রকোপ নিয়ে অশ্বিনের আরও মনে হচ্ছে, মানবজাতিকে শিক্ষা দিয়ে গেল কোভিড-১৯। ‘আমাদের একটা শিক্ষা দিয়ে গেল মারণ ভাইরাস যে, আমরা প্রকৃতিকে সম্মান করছি না। পৃথিবীর ক্ষতি করে দিচ্ছি। এটা হয়তো মানবজাতির প্রতি সতর্কবার্তা।’ তার বিখ্যাত ক্যারম বল নিয়ে অশ্বিন যোগ করেন, ‘আমি নিজের বোলিংয়ে কিছু বৈচিত্র আনতে চেয়েছিলাম। কাজটা সোজা ছিল না। মাঝের আঙুল দিয়ে ক্যারম খেলার কথা ভাবুন আর তার পরে কল্পনা করুন, সেই আঙুলটি দিয়ে ক্রিকেট বলের মতো ভারী বস্তুকে ঠেলে দিচ্ছেন। তার সঙ্গেই করাতে হবে স্পিন।’
শুধু অশ্বিন নন, ক্রিকেট বলে থুতু-তর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার দুই পেসারও। তবে কুম্বলের কমিটির সুপারিশের উল্টো দিকেই তাদের ভোট দিলেন। কলকাতা নাইট রাইডার্সে যোগ দেওয়া প্যাট কামিন্স বলছেন, যদি থুতু ও লালার প্রয়োগ বন্ধই করা হয়, তা হলে অন্য কোনও পদার্থ ব্যবহার করতে দেওয়া হোক। কৃত্রিম উপায়ে যাতে বলের পালিশ রাখা যায়। ‘ঘামের ব্যবহার ঠিক আছে। কিন্তু থুতু এবং লালা যদি বন্ধ করা হয় তা হলে বিকল্প আনা দরকার,’ নিজের দেশের ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইটকে বলেছেন কামিন্স। মাঝে একটি বল প্রস্তুতকারক সংস্থা জানিয়েছিল, তারা মোমের মলম তৈরি করছে পালিশ রক্ষার জন্য। কামিন্স বলছেন, ‘কী সেই পদার্থ আমি জানি না। মোম বা অন্য কিছু ব্যবহার করা যেতে পারে।’
কামিন্সের অস্ট্রেলিয়া দলে সতীর্থ পেসার জশ হেজলউডও মনে করেন, থুতু বা লালা ব্যবহারের উপর নজরদারি রাখা কঠিন হবে আম্পায়ারদের জন্যও। অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদপত্রকে হেজলউড বলেছেন, ‘আমি নিজে চাই না থুতু ও লালার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি হোক। কিন্তু আইসিসি যদি নিষেধাজ্ঞা জারি করে, সেটা তো মানতেই হবে।’
ক্রিকেটে স্বীকৃত মত, ঘামের চেয়েও থুতু ও লালার ব্যবহারেই বলকে বেশি চকচকে রাখা যায়। হেজলউডের কথায়, ‘কেউ থুতু ব্যবহার করছে কি না, আম্পায়ারেরা কী ভাবে তা নজরে রাখবেন সেটাই প্রশ্ন। ম্যাচ চলাকালীন, বলে কোনও ক্ষত দেখলেই থুতু দিয়ে সেই জায়গা মেরামত করার চেষ্টা করা হয়। এই অভ্যাস কি সহজে ত্যাগ করা যায়?’
খবর : আনন্দবাজার’র।
খেলা