বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২২ উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের উদ্যোগে ৩১ মে সকাল ১১টায় এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
র্যালিতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল-‘তামাকমুক্ত পরিবেশ, সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’।
র্যালি শেষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়–য়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি, এমওডিসি ডা. মোহাম্মদ নুরুল হায়দার, জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্লাবন কুমার বিশ্বাস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডা. এএফএম জাহিদ, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সিনিয়র হেলথ এডুকেশন অফিসার থোয়াইনু মং মার্মা প্রমুখ।
স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মচারীবৃন্দ র্যালি ও আলোচনা সভায় অংশ নেন। র্যালি পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, ধূমপান আর বিষপান সমান। তামাকের ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক হুমকি। ধূমপানের কারণে অনেকে জঠিল রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। ধুমপানের পরোক্ষ ধোঁয়ার প্রভাবের কারণে ধূমপায়ীর পাশাপাশি অ-ধূমপায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে তামাকের মরণ ফাঁদ থেকে যুব, কিশোর ও তরুণদের বিরত রাখতে হবে। তামাকের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে যে রোগগুলো হতে পারে তা প্রতিরোধযোগ্য ব্যবস্থা সম্পর্কে সর্বত্র সচেতনা সুষ্টি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, জনমত সৃষ্টি, জনসচেতনতামূলক সভা, এ্যাডভোকেসি মিটিং, প্রেস কনফারেন্স, জনসচেতনতা মূলক ক্যাম্পেইন, মতবিনিময় সভা, সোস্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন, ব্যানার স্থাপন, নো-স্মোকিং সাইনেজ বিতরণ এবং ওয়েবিনারসহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, সড়ক দূর্ঘটনা, করোনা মহামারী বা যে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে প্রাণহাণির চেয়ে তামাক ব্যবহারজনিত কারণে মৃত্যুহার বেশি। তামাক চাষের ক্ষেত্রে কৃষি জমিতে অত্যন্ত ক্ষতিকারক ক্লোরিন, বিভিন্ন রাসায়নিক ও কীটনাশকের ব্যবহার করার ফলে মাটির উর্বরতা হ্রাস, পানি ধারণ ক্ষমতা নষ্ট এবং ক্ষয় বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও এসকল ক্ষতিকর রাসায়নিক নদী ও জলাশয়ের পানিতে মিশে পানি দূষিত করছে যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক হুমকিস্বরূপ। তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য নির্বিচারে বনজ, ফলজ, ঔষধিসহ সব রকম গাছ কেটে চুল্লিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। যা আমাদের জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ ও জলবায়ুর মারাত্বক পরিবর্তন করছে। ফলে জীবন-জীবিকা ও আয়ের উৎসও সংকীর্ণ হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি