নববর্ষবরণের মধ্য দিয়ে বৈশাখ তথা গ্রীষ্মকাল শুরু হয়েছে। চলতি ভাষায় আমরা এই ঋতুকে গরমকালও বলে থাকি। চৈত্রের শেষ দিক থেকেই আসলে সারা দেশে অত্যধিক গরম শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অফিস থেকে এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে তাপপ্রবাহের কথা। তাদের তথ্য মতে এ অবস্থায় দেশের ৫৪ জেলায় বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। এ অবস্থায় রাঙামাটিসহ কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা এমনকি ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার আশপাশে বিরাজ করছে। এ অবস্থায় রীতিমতো হাঁসফাঁস দশা মানুষ ও অন্যান্য প্রাণির। আগামী তিনদিন তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা দেখছে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ইউনিসেফ বলছে, যখন টানা কয়েক দিন কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেশি হয়, তখন সে অঞ্চলের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে বলে উল্লেখ করা হয়। সাথে আর্দ্রতা থাকলে গরমের অনুভূতি যায় আরও বেড়ে।
আবহাওয়া বিজ্ঞানের মতে, উষ্ণ বায়ু যখন কোনো এলাকায় আটকা পড়ে, তখন সে অঞ্চলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। ওই উষ্ণ বাতাস ওই অঞ্চলের বায়ুমণ্ডল থেকে প্রবাহিত হয়ে অন্য অঞ্চলের দিকে সরে না যাওয়া পর্যন্ত এই তাপপ্রবাহ স্থায়ী হয়। গবেষকদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপপ্রবাহ বেশি হচ্ছে। এতে যেসব অঞ্চলে গাছপালা কম, সেসব অঞ্চলের মানুষ বিপাকে পড়ছে বেশি। তাপপ্রবাহের জন্য বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সাথে যুক্ত কারণগুলোই দায়ী ইউনিসেফ আগে থেকেই বলে আসছে, গ্রিন হাউস গ্যাসের নিঃসরণ বৃদ্ধির ফলে নানাভাবে বিপদে পড়ছে পৃথিবী। বায়ুমণ্ডলে থাকা এই গ্রিনহাউস গ্যাস তাপ ধরে রাখছে। আর এর ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অতিরিক্ত গরম, শুধু অস্বস্তি নয়, এটি স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণও হয়ে উঠতে পারে। বিশেষত নবজাতক, শিশু, গর্ভবতী ও বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে এটি ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয় পানিশূন্যতা থেকে। এ ছাড়া অত্যধিক গরমে হিট স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তাই এ সময়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের দেশে প্রচুর মানুষকে কাজ করতে হয় খোলা স্থানে, যেখানে কড়া রোদ পড়ে সরাসরি। এমন স্থানে দীর্ঘক্ষণ কাজ করা ঝুঁকিপূর্ণ। ক্ষেতে-খামারে যারা কাজ করেন কিংবা শহরে রিকশা চালানোর মতো কাজ যারা করেন তাদের অধিক সতর্ক থাকা দরকার। সরাসরি রোদে কাজ না করা, কাজের সময় মাথায় ছাতা বা তেমন কিছু রাখা এবং প্রচুর পানি পান করতে হবে। এ সময় শিশু ও বয়স্কদের প্রতি অধিক যত্নবান হতে হবে।
সে সঙ্গে পরিবেশ সুরক্ষায় আমাদের আরও বেশি যত্নবান হতে হবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ

















































