নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে তদন্ত করবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পূর্বে পুলিশ ও সিআইডি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে দিয়াজের মৃত্যুর বিষয়টি আত্মহত্যা দেখিয়ে একই প্রতিবেদন জমা করা হয়। কিন্তু আদালত তা গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে এ দায়িত্ব প্রদান করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার মামলাটির বাদি দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরীর আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসেন জুনায়েদ।
তথ্যটি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দক্ষিণ ক্যাম্পাসে নিজের বাসা থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার মৃত্যুর তিনদিন পর (২৩ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের দেওয়া প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করা হয়। তার ভিত্তিতে হাটহাজারী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে পুলিশ। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নির্মাণ কাজের দরপত্র নিয়ে কোন্দলের সূত্র ধরে এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যা বলে শুরু থেকেই দিয়াজের পরিবার ও তার অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মীরা দাবি করে আসছিল।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওই বছরের ২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদি হয়ে আদালতে হত্যা মামলা করেন। তখন দিয়াজের মায়ের আপত্তিতে আদালত সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চট্টগ্রাম জেলার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুস সালাম মিয়া আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন। সেই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আবেদন করেন বাদি জাহেদা আমিন চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার আদালত তার শুনানি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এএসপি মর্যাদার এক কর্মকর্তাকে দিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, এ মামলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) তৎকালীন সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, চবি ছাত্রলীগের তৎকালীন কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ, সিনিয়র সহসভাপতি মনসুর আলম, সহসভাপতি আবদুল মালেক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তোরাব পরশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আরমান, প্রচার সম্পাদক সম্পাদক রাশেদুল আলম জিসান ও অপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান ও আরিফুল হক অপুকে আসামি করা হয়।