চট্টগ্রামে ডেঙ্গু সেবার পরিধি বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক এবং চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। গতকাল সোমবার সকালে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বির সঙ্গে সাক্ষাতে চট্টগ্রামের ডেঙ্গু চিকিৎসায় জেনারেল হাসপাতালের সেবার পরিধি বাড়ানোর অনুরোধ জানান তিনি।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য ১০০ শয্যা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বর্তমানে ৩২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। অত্যন্ত কম খরচে খাবার এবং চিকিৎসাসেবা প্রদান করছে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতালে বিভিন্ন উপকরণের সংকট রয়েছে। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি চট্টগ্রামের বিভিন্ন ধনাঢ্য দানশীল ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকেও এক্ষেত্রে মানবিকভাবে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় জেনারেল হাসপাতাল চট্টগ্রামে ডেঙ্গু চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এ সময় সুজন বলেন চট্টগ্রামে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় ডেঙ্গু রোগী আক্রান্ত হচ্ছে। পাশাপাশি নগরীর বাইরে গ্রামেও ডেঙ্গু রোগী আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে নগরীর বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর অত্যধিক চাপ রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু চিকিৎসার খরচ সাধারণ রোগীর নাগালের বাহিরে হলেও শয্যা ফাঁকা না থাকায় এসব হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তি করানো যাচ্ছে না। ফলে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি করাতে গিয়ে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। এমতাবস্থায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু সেবার পরিধি বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, কোভিড মহামারিতে জেনারেল হাসপাতাল চট্টগ্রামের কোভিড চিকিৎসায় অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। পাশাপাশি বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিতেও জেনারেল হাসপাতাল চিকিৎসা সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নামমাত্র মূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার পাশাপাশি খাবার এবং চিকিৎসাসেবাও প্রদান করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তবে সরজমিনে বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে যে সামান্য সুযোগ সুবিধার অভাবে অনেকগুলো বিভাগ চালু করা যাচ্ছে না। হাসপাতালে চিকিৎসা উপকরণ, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন উপকরণের অভাব রয়েছে। এজন্য দানশীল মানুষকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান সুজন। কোভিড চিকিৎসায় চট্টগ্রামের দানশীল ব্যক্তিরা যেভাবে এগিয়ে এসেছেন একইভাবে বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিতেও সকলকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি। পাশাপাশি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কোভিড চিকিৎসায় আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছিল, একইভাবে ডেঙ্গু চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার অনুরোধ জানান তিনি।
সুজন এসময় জেনারেল হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে ভর্তিকৃত রোগী এবং তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলেন। তারা সকলেই জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করারও অনুরোধ জানান তিনি।
এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্সগণ উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি