স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। এপ্রিলে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০৪। এ ছাড়া মারা যায় দু’জন। আগস্টে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজারে এবং ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত আট মাসে ৮৬ জন মারা গেছে এবং ১৩ হাজার ৩১৯ জন আক্রান্ত হয়েছে। গত কয়েক মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতায় এটাই উঠে এসেছে যে, দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুও ধামাচাপা পড়ে যায় ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ডেঙ্গু সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। তারা জানিয়েছেন, প্রস্তুতি না থাকলে ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারে। এ জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকি বাড়ানো, পর্যাপ্ত শনাক্তকরণ কিট ও আইভি ফ্লুইড সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি। জুলাই মাসে ২৫০ শয্যার সরকারি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৩১৩ জন ডেঙ্গু রোগী। আর গত আগস্ট মাসে ভর্তি ছিলেন ৯৯৯ জন। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে তিন গুণের বেশি। গত তিন মাসের পরিসংখ্যান হিসাব করলে ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে ৩২ গুণের বেশি।
চিকিৎসকেরা জানান, গত আগস্ট মাসজুড়ে ভারী বর্ষণের কারণে চলতি সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। তা ছাড়া ডেঙ্গুর মৌসুমও শুরু হয়েছে। এ কারণে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। গত তিন দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৬৪ জনের বেশি। বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৮৮ জন। এর মধ্যে ১৪ জন শিশু, ২৬ জন নারী ও ৪৮ জন পুরুষ।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও মশক নিধনের কাজটি করে মূলত সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা। ৫ আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পরপর এসব প্রতিষ্ঠানের মেয়ারেদ সরিয়ে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কাউন্সিলরদের অধিকাংশ গা ঢাকা দিয়েছেন, অনেকে পূর্ণসময় অফিস করছেন না। ফলে দেশের সর্বত্র নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বেড়ে গেছে।
যাই হোক, সমস্যার মোকাবেলা না করে তো উপায় নেই। কাজেই জনগণকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। নিজের বাড়ি তো বটেই, এর আশপাশ পরিস্কার রাখার সঙ্গে সঙ্গে পাড়া-মহল্লার মানুষকেও সচেতন করার উদ্যোগ নিতে হবে।