নিজস্ব প্রতিবেদক »
নগরের সিইপিজেডের এক কারখানায় কাজ করেন বিশ্বজিৎ সরকার। পুত্র-কন্যা ও স্ত্রী নিয়ে বসবাস করেন সদরঘাটের পোস্ট অফিস গলিতে। সন্তানের কোনো আবদার অপূর্ণ রাখেননি। কিন্ত এক ঝড়েই থেমে গেলো সব। ডেঙ্গুতে ১১ বছরের কন্যাকে হারালেন। একই রোগে আক্রান্ত হয়ে বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্ত্রী-পুত্রও।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (৪ জুলাই) রাত ৯টার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজিৎ সরকারের একমাত্র মেয়ে শ্রাবন্তী সরকারের মৃত্যু হয়। গত ১ জুলাই থেকে তার এবং ভাইয়ের শরীরেও জ্বর দেখা দেয়। এরপর ৩ জুলাই তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। বাসা থেকে চিকিৎসা করানো হচ্ছিলো। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শ্রাবন্তীকে মঙ্গলবার বিকালে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়। রাতেই বলুয়ার দিঘি মহাশ্মশানে মেয়ের সৎকার সেরে নিহত শ্রাবন্তীর ভাই সৌভিককে রাত একটার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সন্তানের সাথে মায়েরও জ্বর, চলছে চিকিৎসা।
বিশ্বজিৎ সরকার মুঠোফোনে বলেন, ডেঙ্গুতে আমার মেয়েকে হারিয়েছি, স্ত্রী ও পুত্র হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। বুকের এক ধনকে হারিয়েছি। পুত্রকে বাঁচানোর লড়াই চলছে বলে কেঁদে দেন। আর কথা বলতে পারেননি।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জ সূত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গুতে জানুয়ারিতে ৫৬ , ফেব্রুয়ারিতে ১১, মার্চে ৭, এপ্রিলে ১৩, মে মাসে ৩২, জুনে ২৮২ এবং জুলাইয়ে ১৯৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। চলতি বছরে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন-আদনান (৭ মাস) , শারমিন আক্তকার (১৫), আবু জাফর(৪৩), সাকিবুল হাসান (১৬), সেলিনা খাতুন (৫৮) এবং নূর চৌধুরী (৭০) , সুমাইয়া(১৬) শাহনাজ বেগম (৩০), নানজিবা নাওয়ার (৫), মাহেদুল (৩৫), রুবেল (২৮) এবং শ্রাবন্তি সরকার (১২)।
উপজেলায়ও আক্রান্তের সংখ্যা কম নয়। গত চব্বিশ ঘণ্টায় লোহাগাড়ায় ৪, সাতকানিয়ায় ১৫, বাঁশখালীতে ১১, আনোয়ারায় ৭, চন্দনাইশে ৬, পটিয়ায় ১১, বোয়ালখালীতে ৬, রাঙ্গুনিয়ায় ৪, রাউজানে ১১, ফটিকছড়িতে ১, হাটহাজারীতে ৮, সীতাকু-ে ৯৬, মিরসরাইয়ে ১০, সন্দ্বীপে ৪ এবং কর্ণফুলীতে ৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে এডিস মশা ও লার্ভা নির্মূলে চলতি বছরের গত ২৩ জুন নগরীতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। প্রতিদিন ৪০০ জন কর্মী নিয়ে নগরের বিভিন্ন অলি-গলিতে এ কার্যক্রম চলছে।