ডেঙ্গুর শঙ্কা : প্রতিরোধের প্রস্তুতি আছে কি

জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয় চট্টগ্রামে । এ সময় প্রতি মাসে গড়ে আড়াই হাজারের বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। সে হিসেবে এ পাঁচ মাস ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়। তাই এ সময়ে ডেঙ্গু নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগও তটস্থ থাকে।
এবছর জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে শনাক্ত হয়েছে ১৪ জন ডেঙ্গু রোগী।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র বলছে, এ বছরের জানুয়ারিতে ৬৯, ফেব্রুয়ারিতে ২৫, মার্চে ২৮, এপ্রিলে ১৮, মে-তে ৫৩, এবং জুনে ৪১ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। ডেঙ্গুতে ২০২১ সালে ২৭১, ২০২২ সালে ৫ হাজার ৪৪৫ এবং গত বছর ১৪ হাজার ৮৭ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয় চট্টগ্রামে।
শনাক্তের সংখ্যা নগরে বেশি। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত ২১২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ১০৭ জন মহানগরের এবং ১০৫ জন উপজেলার বাসিন্দা। এছাড়া শনাক্ত হওয়াদের মধ্যে ১১২ জন পুরুষ, ৫২ জন মহিলা এবং ৪৮ জন শিশু।
উপজেলার মধ্যে রোগী বেশি লোহাগাড়ায় । শনাক্তের মধ্যে সর্বোচ্চ ২২ জন হচ্ছেন লোহাগাড়ার। চলতি বছর এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে ২ জন মারা গেছেন। দুজনই মারা গেছেন জানুয়ারিতে । চট্টগ্রামে গত বছর ১০৭, ২০২২ সালে ৪১ এবং ২০২১ সালে ৫ জন মারা গেছেন।
ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিশ্চিতে নানা উদ্যোগের খবর জানা গেছে স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে। এর অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে কমপক্ষে ৩ থেকে ৫টি বেড দিয়ে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড কর্নার করার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন সিভিল সার্জন। একইসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা না দিয়ে কোনো ডেঙ্গু রোগীকে নগরে প্রেরণ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিপদটা বাড়বে বৃষ্টি থেমে গেলে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এখন তো টানা বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি যদি ৭/৮ দিন বন্ধ থাকে তাহলে ডেঙ্গু বাড়তে পারে। যেহেতু স্বচ্ছ পানিতে এডিসের জন্ম তাই এক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হতে হবে।’
আসলে ব্যক্তিগত সচেতনতা ছাড়া উপায় নেই। এডিস মশা নোংরা পানিতে হয় না। তাই শুধু নালায় ওষুধ ছিটালে কাজ হবে না। মানুষকে তার বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার রাখতে হবে। ৩ দিনের জমে থাকা পানি ফেলে দিতে হবে। ছাদবাগানের টবে জমা পানি ফেলে দিতে হবে। সবকিছু সরকার বা সংস্থার ওপর ছেড়ে না দিয়ে পাড়ায় পাড়ায় প্রচারণা চালাতে হবে। মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। নিজেদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা প্রত্যেকে যদি নিজের চারপাশ নিজেরাই পরিচ্ছন্ন রাখি তাহলে পুরো দেশটাই ঝুঁকিমুক্ত থাকবে।