‘কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের ক্রম ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে চসিক আজ থেকে জরুরি ভিত্তিতে কার্যক্রম ও অভিযান পরিচালনা শুরু করবে। এই লক্ষ্যে প্যানেল মেয়রের নেতৃত্বে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি প্রয়োজনীয় পর্যবেক্ষণ, তদারকি ও কর্মপন্থা বাস্তবায়নে মাঠে থাকবে।’
গতকাল সোমবার সকালে ভার্চুয়াল সংযোগের মাধ্যমে টাইগারপাসস্থ চসিকের অস্থায়ী ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৬ষ্ঠ সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রামে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব বিস্তার এখন পর্যন্ত ঢাকার মত প্রকট নয় এবং এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। ডেঙ্গু রোগ বিস্তার প্রতিরোধে যে সকল জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার তা প্রয়োগ করতে চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের জনবলকে সক্রিয় রাখতে সকল প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। এডিস মশা প্রজননের উৎসগুলো প্রতিষেধক ওষুধ ছিটানো এবং নালা-নর্দমা-খাল ও জলাশয় আবর্জনা মুক্ত রাখতে যাবতীয় কর্মপন্থা চলমান রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে কাউন্সিলরদের নিজ নিজ ওয়ার্ডে তদারকি ও নজরদারির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণের ক্রম ঊর্ধ্বগতি সামাল দিতে চলমান কঠোর লকডাউনকালে কোথাও যাতে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘিত না হয় সে ব্যাপারে চসিকের সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে। চসিকের ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদেও সকল প্রতিনিধি, কর্মকর্তা ও জনবল কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবধরনের সক্ষমতা ইতিবাচক প্রয়াস চলমান রেখেছে। এ ক্ষেত্রে কোন ব্যবস্থাপনা ত্রুটি ও বিচ্যুতি থাকলে নগরবাসীর আকাক্সক্ষা অনুযায়ী তার সংশোধন, পরিবর্তন ও পরিবর্তনে কাউন্সিলরদের সহায়ক ভূমিকা পালনে আহ্বান জানান।
তিনি নগরীর আলোকায়নের ক্ষেত্রে যে-সকল ব্যত্যয়, অপ্রতুলতা ও অপর্যাপ্ততা বিদ্যমান তা নিরসনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। অনেক স্থানে বৈদ্যুতিক বাতি অচল হয়ে আছে, কিছু এলাকায় বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিভাগ আলোকায়ন পুনঃস্থাপনে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করবে। এ ছাড়া বৃষ্টির কারণে যে সকল অভ্যন্তরীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেসব সড়ক বৃষ্টি কমে আসলে মেরামত করা হবে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের খানা খন্দকগুলো ইটের খোয়া দিয়ে ভরাট করা হবে। স্ট্যান্ড রোডের কাজ সমাপ্তির পথে। যে অংশগুলো এখন অনুপযোগী সেগুলো দ্রুত যান চলাচল উপযোগী করা হবে। পিসি রোডের অসমাপ্ত কাজ নভেম্বরের মধ্যেই শেষ করতে হবে। এখানে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শেখ মুজিব রোডের যে অংশে সিডিএ এলিভেটর এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেখানে স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যহত হচ্ছে। এই অংশগুলো দ্রুত মেরামত করে দিতে সিডিএ কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মশক নিধন কার্যক্রম সম্পর্কে মেয়র বলেন, ব্যবহৃত তরল ওষুধের কার্যকারিতা যাচাইয়ে চবি’র বিশেষজ্ঞ টিমের প্রতিবেদন পাওয়া মাত্র প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তিনি প্রস্তাবিত আয়বর্ধক প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে বলেন, চসিকের মালিকানাধীন অব্যবহৃত জায়গায় কি ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায় সে ব্যাপারে কাউন্সিলরগণ মতামত ও পরামর্শ দেবেন।
তিনি জানান, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় চসিকের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট আইসোলেশনে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আক্রান্ত রোগী পরিবহনে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রদানসহ সব ধরনের চিকিৎসাসেবা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি আরো উল্লেখ করে বলেন, এখন পর্যন্ত নগরীতে চসিকের ব্যবস্থাপনায় সাড়ে ৪ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে, যা অত্যন্ত সন্তোষজনক। ভবিষ্যতে টিকা প্রদান কার্যক্রম আরো গতিশীল করা হবে।
চসিক ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় সাধারণ সভায় প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলরবৃন্দ, বিভাগীয় প্রধানগণ বক্তব্য রাখেন। বিজ্ঞপ্তি