ফজলে এলাহী, রাঙামাটি »
কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ার কারণে শুক্রবার সকালে ডুবে গেছে ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ খ্যাত পর্যটনের ঝুলন্ত সেতুটি। শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সেতুর পাটাতন ডুবে গেছে, বাড়তি পানির সাথে সাথে আরো তলিয়ে যাচ্ছে সেতুটি। সাধারণত ১০৮ এমএসএল পানি উঠলে দুই থেকে তিনফুট পানির নীচে চলে যায় সেতুটি। টানা কদিনের ভারি ও একটানা বর্ষণে বৃদ্ধি পেয়েছে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি। হ্রদের পানি বাড়ায় কর্ণফুলী পানিবিদ্যুকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনও বেড়েছে।
শুক্রবার ২১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। যা এই মৌসুমে এটি সর্বোচ্চ উৎপাদন বলে জানিয়েছে কর্ণফুলী পানিবিদ্যুকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের তথ্য মতে, কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে ২৩০ থেকে সর্বোচ্চ ২৪২ মেগাওয়াট। কাপ্তাই হ্রদে পানি কমে যাওয়ায় গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে মাত্র একটি ইউনিট থেকে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন হতো। যা সর্বনিম্ন উৎপাদন গিয়ে ঠেকে।
বর্তমানে ১নং ইউনিট থেকে ৪৬ মেগাওয়াট, ৩নং ইউনিট থেকে ৪৯মেগাওয়াট, ২নং,৪নং ও ৫নং ইউনিট থেকে যাথাক্রমে ৪০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। ১ নং ও ২নং ইউনিট থেকে সর্বোচ্চ ৪৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। আর ৩নং, ৪নং ও ৫নং ২নং ইউনিট থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। তবে যান্ত্রিক ত্রুটি ও নানান বাস্তবতার কারণে এখন আর সর্বোচ্চ ২৪৫ মেগাওয়াট উৎপাদন করা সম্ভব হয়না।
কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের জানান, কাপ্তাই হ্রদে পানি না থাকায় গেল মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন নেমে এসেছিল ২৫ মেগাওয়াটে। জুলাই ও আগস্ট মাসে কয়েক দফা বৃষ্টিতে হ্রদের পানি বেড়ে যায়। এতে পর্যায়ক্রমে সব কটি ইউনিট চালু করা সম্ভব হয়। বর্তমানে পাঁচটি ইউনিটেই বিদ্যুৎ উৎপাদন চলছে। গতকাল শুক্রবার এই উৎপাদন বেড়ে ২১৮ মেগাওয়াট হয়েছে,যা এই মৌসুমে সর্বোচ্চ।
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই হ্রদে সর্বোচ্চ পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট এমএসএল (মিন সি লেভেল)। বর্তমানে হ্রদে পানির উচ্চতা রয়েছে ১০৬.০৩ ফুট এমএসএল। সাধারণত পানির উচ্চতা ১০৮ এর বেশি হলে তখন আমরা গেইটগুলো খুলে দিতে থাকি।
ব্যবস্থাপক আরো জানান, গেট খুলে দেয়ার আগে সবসময়ই আমরা কাপ্তাই ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা প্রশাসন,চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও নৌবাহিনীকে চিঠি দিয়ে অবহিত করি এবং এরপর তারাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান অপপ্রচার বিষয়ে সবাই সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে এই প্রকৌশলী দুর্যোগ পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল আচরণ করার পরামর্শ দেন সবাইকে।