সরবরাহে ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ডিমের বাজার অস্থির করে তোলার অভিযোগ উঠেছে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসন অভিযান চালালে উল্টো ‘হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন’ এমন দাবি তুলে ডিম বেচাকেনা বন্ধ করে দিয়েছে পাহাড়তলী বাজারের পাইকারি ডিমব্যবসায়ী ও আড়তদারেরা। শনিবার সকাল থেকে ডিম বেচাকেনা বন্ধের ঘোষণা দেন তাঁরা।
ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, পাইকারি বাজারগুলোতে ডিমের সংকট নেই। উত্তরবঙ্গের সাথে যোগাযোগ ভালো থাকাতে বাজারে নিয়মিতই ডিম আসছে। কিন্তু পাইকারি ব্যবসায়ীদের অসাধুচক্র তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে ও অধিক লাভের আশায় কারসাজি করে ডিমের দাম বাড়িয়েছে।
অন্যদিকে, ডিম বেচাকেনা বন্ধ রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল শুক্কুর বলেন, ‘আমরা দেশের বিভিন্ন স্থানের উৎপাদক থেকে ডিম এনে বিক্রি করি। যেদিন যেমন দামে কিনতে পারি, সেদিন কিছুটা লাভে বিক্রি করছি। কিন্তু ভোক্তা অধিকার ও জেলা প্রশাসন এসে আমাদের ডিমের দামে কারসাজি আছে দাবি করে জরিমানা করছেন। ব্যবসায়ীদের বারবার হয়রানি করা হচ্ছে। এতে কেনা দামের চেয়ে কমে বিক্রি করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। আমরা তাই অনির্দিষ্টকালের জন্য ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছি।’ তিনি দাবি করেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি নীতিমালা দেওয়া হোক, আমরা কত দামে কিনবো আর কত মার্জিন রেটে বিক্রি করবো। যতদিন না প্রশাসন এটা দিচ্ছে, ততদিন আমরা ডিম কেনাবেচা বন্ধ রাখবো।’
সুপ্রভাতকে করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও উৎপাদকেরাই ডিমের দামে কারসাজি করছে বলে অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও উৎপাদকেরা। প্রশাসন সেখানে না গিয়ে আমাদের ধরতে এলে তো হবে না। কিন্তু প্রশাসন করপোরেট কোম্পানির কাছ ঘেঁষছে না, অথচ আমাদের জরিমানা করছে।
প্রায় ২ বছর ধরে বাজারের উচ্চমূল্য সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ভোক্তারা। এর মধ্যেই দফায় দফায় বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে সুযোগ নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। বাজার মনিটরিং না থাকাকে এমন অবস্থার জন্য দায়ী করছে মানুষ। বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি নতুন নয়। সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। চলমান পরিস্থিতিতে স্বল্প আয়ের মানুষের নিত্যদিনের চাহিদায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে। সব মিলে নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম মেটাতে ভোক্তার হাঁসফাঁস অবস্থা। আর দাম বাড়ানোর ব্যাপারে সিন্ডিকেটের কারসাজি নিয়ে জনমনে চরম অসন্তোষ বিরাজ করলেও আজ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে জোরালো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এটা দুঃখজনক। সিন্ডিকেটকারীরা কি তবে সরকারের চেয়েও শক্তিশালী? এ প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের।
এ মুহূর্তের সংবাদ