কারাবিধি অনুযায়ী, কোনো কারা কর্মকর্তা-কর্মচারী বন্দীদের কাছে কোনো সামগ্রী বিক্রি কিংবা ভাড়া দিতে পারেন না। কিন্তু চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) টিপু সুলতান। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দীদের জন্য প্রতিদিন নিজ খামারের দুধ বিক্রি করছেন তা-ও আবার বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে।
একটি পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ডিআইজি প্রিজনের কার্যালয় নগরের লালদীঘির পাড়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের পূর্বের সীমানাদেয়াল–সংলগ্ন এলাকায়। কার্যালয়ের পাশেই তাঁর বাংলো। বাংলোর সামনে ১৩টি গরু–বাছুর পালন করেন তিনি। এগুলো দেখভাল করেন সরকারি বেতনভুক্ত কারাগারের চার পরিচ্ছন্নতাকর্মী (সুইপার)। এই চারজন বাইরে গরু খামারে ব্যস্ত থাকায় বাকি পাঁচ পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে প্রায় পাঁচ হাজার বন্দীর কারাগার পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে হিমশিম খেতে হয়।
অথচ কারাবিধিতে উল্লেখ রয়েছে, ‘কারাগারের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী কিংবা তাঁর বিশ্বস্ত বা নিযুক্তিয় কোনো ব্যক্তি, কোনো বন্দীর নিকট কোনো দ্রব্য বিক্রয় বা ভাড়া প্রদান করবেন না বা কোনো বন্দীর কোনো দ্রব্য বিক্রয় বা ভাড়া প্রদান হতে অর্জিত সুবিধা বা কোনো টাকা গ্রহণ করবেন না বা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো বন্দীর সঙ্গে অন্যান্য ব্যবসায়িক কারবার করবেন না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারা ক্যানটিনের কর্মকর্তারা জানান, ডিআইজি প্রিজনের খামার থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে বাড়তি দামে দুধ কিনতে তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারা ক্যানটিনের দায়িত্বে থাকা উপকারাধ্যক্ষ নওশাদ মিয়া সংবাদকর্মীকে বলেন, ‘আপনারা সব জানেন। আমি কিছু বলতে পারব না।’
অন্যদিকে কাঁচা তরল দুধ বন্দীদের জন্য কারাগারে ঢোকানো বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছেন কারা অধিদপ্তরের সাবেক উপমহাপরিদর্শক শামসুল হায়দার সিদ্দিকী। তিনি বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী ডিআইজি প্রিজন নিজের খামারের দুধ বন্দীদের কাছে বিক্রি করতে পারেন না। এখনই বন্ধ না করলে যেকোনো সময় বড় অঘটন ঘটতে পারে।
ডিআইজি প্রথমত চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেছেন। দ্বিতীয়ত তিনি বাজারমূল্যের চেয়ে দাম বেশি রেখে সরকারের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তৃতীয়ত তিনি কারাগারের কর্মচারীকে নিজের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেছেন এবং চতুর্থত বাইরে থেকে তরল খাবার এনে বন্দীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন। এরপরও তিনি বহাল তবিয়তে আছেন।
এ মুহূর্তের সংবাদ