আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস
নিজস্ব প্রতিবেদক »
পটিয়া থেকে নিয়মিত অফিস করেন ওমর ফারুক। তিনি একজন সংবাদকর্মী। প্রতি সকালে শহরে আসতেন। এরপর নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিবেদন সংগ্রহ করতেন। বাড়ি ফিরতে ফিরতে কখনো রাত ১১টা , কখনো ১১টার অধিক সময় যেত। আর এভাবেই চলতো তার সংবাদ সংগ্রহের কার্যকলাপ। ২০১৫ সালে এসে শরীরে বাসা বাঁধে ডায়াবেটিস।
কঠিন নিয়মের বেড়াজালে আটকে পড়েন। ২০১৯ সালে এসে এ রোগ আরও জটিল হয়ে যায়। ধরা পড়ে ডায়াবেটিক ফুট। পরে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানে তার পায়ের এক আঙুল কেটে ফেলা হয়।
ডায়াবেটিক ফুট কি
ডায়াবেটিসের অনেকগুলো জটিলতার মধ্যে একটি মারাত্মক জটিলতা হলো, পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি বা ডায়াবেটিক ফুট। এর ফলে পায়ে অসারতা ও ব্যথা হয় অথবা অনুভূতি হারিয়ে যায়। পায়ে রক্ত চলাচল কমে যায় বলে ক্ষত শুকাতে দেরি হয়। পা ও পায়ের আঙুলের আকৃতিতে পরিবর্তনও হতে পারে। নিয়ন্ত্রণ না করলে পাও হারাতে হয়।
ওমর ফারুক বলেন, ‘২০১৫ সালে আমার ডায়াবেটিস টাইপ টু হয়। এরপর খাবার-দাবার, হাঁটাচলা সব নিয়মমাফিক হয়ে যায়। এরপর ২০১৯ সালে এসে ডায়াবেটিক ফুটের সিমটম ধরা পড়ে। অস্বাভাবিকভাবে পা ফুলে যায়। এরপর চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে শুরু করি। সেখানে পায়ের অপারেশন হয়। পরে পায়ের তলায় সেলাই করোনো হয়।
কোনো উন্নতি না হওয়ায় আমি ঢাকা বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যায়। সেখানে পায়ের সেলাই দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেন চিকিৎসকরা। তারা জানান, পায়ের তলায় সেলাই করানো যায় না। এটা ভুল চিকিৎসা বলে তারা সাফ জানিয়ে দেন। পরে আমার এক আঙ্গুল কাটা হয়। যদি সেটা না করতাম এক পা হারাতাম।
এ প্রসঙ্গে ওই হাসপাতালের ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. মাসুদ করীম বলেন, যাদের পায়ে ঘা হয়, তারা জটিল রোগী। এসব রোগীদের চিকিৎসা করালেও ভালো হয়না। আবার অনেকের হয়। কখন ভালো হবে কিংবা আদৌ ভালো হবে কিনা বলা মুশকিল। যারা ভালো হয় না, তারা অনেকেই ভুল চিকিৎসা মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত সেবা রয়েছে। এখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডাক্তার, সিসিও, আইসিও, ডায়ালাইসিস সব ধরনের চিকিৎসা সেবা রয়েছে।
বিষয়টি অস্বীকার করে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, আমাদের ডায়াবেটিস হাসপাতাল একটি স্পেশালাইজড হাসাপাতাল। এখানে চিকিৎসা সেবা পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। আমাদের চিকিৎসা সেবা ভুল হতেই পারেনা। এটা হতে পারে রোগীর অবস্থা খুব জটিল ছিলো। আমাদের হাসপাতালে সব চিকিৎসক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাদের তো ভুল চিকিৎসা করার কথা না।
২০১৯ সালের ঘটনা বলায় তিনি আরও বলেন, তখন কি হয়েছে আমি জানিনা। এখন ২০২২ সাল। চিকিৎসা সেবা অনেক উন্নত হয়েছে। আগে ডায়াবেটিক ফুট হলেই ঢাকা যেতে হতো; এখন আর যেতে হয়না। সমস্ত ব্যবস্থা আমরা করেছি। তিনি আরো জানান এটা ভুল চিকিৎসা সেবা হতেই পারেনা।