সুপ্রভাত স্পোর্টস ডেস্ক »
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের সামনে। বাংলাদেশের পরের রাউন্ড যাওয়ার সবচেয়ে বড় বাঁধা ডাচরা। এমন সমীকরণের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সুপার এইটের পথে এক ধাপ এগিয়ে থাকলো বাংলাদেশ।
টসে হেরে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ তুলেছিল ১৫৯ রান। ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানে থেমেছে নেদারল্যান্ডস। ২৫ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
বিক্রমজিৎ সিং ও সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট বাংলাদেশের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছিলেন। মাহমুদউল্লাহ আনেন প্রথম ব্রেকথ্রু, ফেরান বিক্রমজিৎকে। তারপর এঙ্গেলব্রেখট মারকুটে ব্যাটিংয়ে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান। ১৫তম ওভারে রিশাদ হোসেন বল হাতে নিয়ে ম্যাচের গতি পাল্টে দেন। ব্যাকফুটে থাকা বাংলাদেশকে উচ্ছ্বাসে ভাসান তিনি। ওই ওভারে এঙ্গেলব্রেখটকে আউট করেন, এক বল বিরতি দিয়ে স্টাম্পিং হন বাস ডি লিড। সাকিব আল হাসান মাত্র ৫ রান দেন।
এক সময় পর্যন্ত লড়াইয়ে থাকলেও শেষদিকে এসে কঠিন হয়ে যায় নেদারল্যান্ডসের সমীকরণ। ১৭তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান দিলেন ১ রান। ৩ রান দিলেন ১৯তম ওভারে। আর অন্য প্রান্তে নিয়মিত উইকেট তুলেছেন রিশাদ হোসেন। তাতে শেষ ওভারে তখন প্রয়োজন হয় ৩৩ রানের। তবে শেষ ওভারে ৭ রানের বেশি দেননি তাসকিন আহমেদ। তাতে স্বস্তির জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে সুপার এইটে ওঠার লড়াইয়ে এগিয়ে গেল টাইগাররা।
চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুটি ম্যাচেই পরে ব্যাট করতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। এবার টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ১৫৯ রান করলো তারা।
সাকিব আল হাসান তার ভক্তদের হতাশা কাটালেন দারুণ এক ইনিংস খেলে। চতুর্থ ওভারে ক্রিজে নেমে ৪৬ বলে ৯ চারে ৬৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। শেষ ওভারে স্কোরবোর্ডে ১২ রান যোগ করতে দুটি চার মারেন বাঁহাতি ব্যাটার। তার আগে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ১৯ রান তোলেন চারটি চার মেরে।
শেষ দুই ওভারে বাংলাদেশ করেছে ২৬ রান। জাকের আলী শেষের আগের ওভারে তিন চার মারেন। ৭ বলে ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে শেষ ৫ ওভারে যোগ হয়েছে ৫৪ রান। মাহমুদউল্লাহ ও সাকিবের পঞ্চম উইকেট জুটি ৪১ রান তোলে। তার আগে তানজিদ হাসান তামিমের সঙ্গে বাঁহাতি ব্যাটারের জুটিতে আসে ৪৮ রান। ২৬ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৩৫ রান করেন তানজিদ। মাহমুদউল্লাহ ২১ বলে ২৫ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন।
নেদারল্যান্ডসের পক্ষে আরিয়ান দত্ত ও পল ফন মিকেরেন দুটি করে উইকেট নেন।
চার পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপে দ্বিতীয় স্থানে উঠেছে বাংলাদেশ। ২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে নেদারল্যান্ডস। সোমবার তারা শেষ ম্যাচ খেলবে বিদায় নিশ্চিত হওয়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। বাংলাদেশ শেষ ম্যাচ জিতলেই সুপার এইটে উঠে যাবে। নেপালের কাছে তারা হারলেও নেদারল্যান্ডস যদি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততে না পারে, সেক্ষেত্রেও বাংলাদেশ চলে যাবে পরের পর্বে। তবে বাংলাদেশ শেষ ম্যাচ হেরে গেলে এবং নেদারল্যান্ডস লঙ্কানদের হারালে দুই দলের পয়েন্ট সমান হবে, সেক্ষেত্রে নেট রান রেটে নির্ধারণ হবে কে যাবে সুপার এইটে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নেদারল্যান্ডস: ২০ ওভারে ১৩৪/৮ (লেভিট ১৮, ও’ডাওড ১২, বিক্রমজিত ২৬, এঙ্গেলব্রেখট ৩৩, এডওয়ার্ডস ২৫, ডি লিডি ০, ফন বিক ২, প্রিঙ্গল ১, আরিয়ান ১৫*; মোস্তাফিজ ১/১২, তানজিম ১/২৩, তাসকিন ২/৩০, সাকিব ০/২৯, রিশাদ ৩/৩৩, মাহমুদউল্লাহ ১/৬)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৯/৫ (তানজিদ ৩৫, শান্ত ১, লিটন ১, সাকিব ৬৪*, হৃদয় ৯, মাহমুদউল্লাহ ২৫, জাকের ১৪*; কিংমা ০/২০, আরিয়ান ২/১৭, মেকেরেন ২/১৫, ফন বিক ০/৪৩, ডি লিডি ০/৩১, প্রিঙ্গল ১/২৬)।
ফলাফল: বাংলাদেশ ২৫ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)।