ট্রমা সেন্টারটি দ্রুত চালু হোক

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি দেশের অন্যতম দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়ক। প্রায় প্রতিদিন এ সড়কে বড়-ছোট দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের জরুরি চিকিৎসা দিতে লোহাগাড়া উপজেলায় নির্মাণ করা হয় একটি ট্রমা সেন্টার (আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাকেন্দ্র)। প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ট্রমা সেন্টারটি উদ্বোধনও করা হয় ২০১৩ সালে। তবে বিস্ময়কর হচ্ছে, ১২ বছর পার হলেও জনবল ও যন্ত্রপাতির অভাবে এটি চালু করা যায়নি।

২০০৭ সালে ২০ শয্যার লোহাগাড়া ট্রমা সেন্টারটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনতলা ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১২ সালে। এই সেন্টারের জন্য চিকিৎসা কর্মকর্তা, জুনিয়র কনসালট্যান্ট, সহকারী সার্জন, নার্স, টেকনোলজিস্টকে মোট ২৭টি পদের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু এসব পদের বিপরীতে জনবল পদায়ন করা হয়নি। যন্ত্রপাতিও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি, যার কারণে চালু করা যায়নি ট্রমা সেন্টারটি।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ১৪৮ কিলোমিটার। দুই লেনের সরু এই মহাসড়ক খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্ঘটনাপ্রবণ হিসেবে পরিচিত। মহাসড়কটির কাছে কোনো বিশেষায়িত হাসপাতাল নেই। ট্রমা সেন্টার উদ্বোধনের পরও চালু না হওয়ার কারণে মহাসড়কটিতে হতাহত ব্যক্তিরা দ্রুত চিকিৎসাসেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে বান্দরবান ও কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতে যান পর্যটকেরা। এ কারণে সড়কটিতে সব সময় যানবাহন ও যাত্রীর বাড়তি চাপ থাকে। সরু সড়কটিতে অসংখ্য ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকের সঙ্গে রয়েছে তিন চাকার যানবাহনের দৌরাত্ম্য। এ ছাড়া লবণবোঝাই ট্রাক থেকে ঝরে পড়া পানির কারণে পিচ্ছিল থাকে সড়কটি। যার কারণে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। তবে মহাসড়কের পাশে বিশেষায়িত হাসপাতাল না থাকায় দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ব্যক্তিরা দ্রুত চিকিৎসাসেবা পান না। এতে মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই মারা যান অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে। আহত ব্যক্তিদের গোল্ডেন আওয়ারের (প্রথম এক ঘণ্টা) মধ্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে রক্তপাত বন্ধ করা গেলে অনেকের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়।
আমরা মনে করি, জনস্বার্থে সরকার ট্রমা সেন্টারটি চালু করার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।