সুপ্রভাত ডেস্ক
দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাসটেইনেবল রেটিং ২০২২ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চারটি সুচকের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা রেটিংয়ে শীর্ষে অবস্থান করেছে ৭ ব্যাংক ও ৪ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ এই সাসটেইনেবল রেটিংয়ে ব্যাংকের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। এরপরই রয়েছে যমুনা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক।
শীর্ষে থাকা এনবিএফআইগুলো হলো অগ্রণী এসএমই ফাইন্যান্সিং, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স, আইডিএলসি ফাইন্যান্স এবং লঙ্কান অ্যালায়েন্স ফাইন্যান্স। খবর টিবিএস’র।
যে চার সূচকের ভিত্তিতে এ রেটিং প্রণয়ন করা হয়েছে সেগুলো হলো- টেকসই অর্থায়ন নির্দেশক (সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ইন্ডিকেটর), সবুজ পুনঃঅর্থায়ন (গ্রিন রিফাইন্যান্স), সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম (সিএসআর) এবং মূল ব্যাংকিং কার্যক্রমের টেকসই সক্ষমতা (কোর ব্যাংকিং সাসটেইনেবিলিটি)।
২০২১ এর সাসটেইনেবল রেটিংয়ে শীর্ষ ব্যাংক ছিল ১০টি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছিল ৫টি। নতুন রেটিংয়ে আগের বছর তালিকায় থাকা ৮টি ব্যাংক ও ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাদ পড়েছে। এ পর্যন্ত প্রকাশিত তিনটি তালিকায়ই ব্র্যাক ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক জায়গা করে নিয়েছে। এনবিএফআইগুলোর মধ্যে আইডিএলসি ফাইন্যান্সও তৃতীয়বারের মতো তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর চৌধুরী লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমরা চারটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে সাসটেইনেবল রেটিং করে থাকি। আমরা নিদিষ্ট কিছু বিষয়ে প্যারামিটার দিয়েছি। সেসব ব্যাংক সেগুলো ফুলফিল করতে পারবে তারাই শীর্ষ তালিকায় আসবে।’ ‘এই রেটিং নির্দিষ্ট ২০২২ সালের জন্য। কোন ব্যাংক যদি বাদ পরে তাহলে তারা খারাপ ব্যাংক, তা নয়’, বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, কিছু ব্যাংক সার্বিকভাবে ভালো করছে কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দিষ্ট প্যারামিটার পূরণ করতে না পারায় সেগুলো তালিকায় ছিল না।
বাংলাদেশ ২০২১ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো টেকসই রেটিং প্রকাশ করে। তালিকাটি তৈরি করা হয় আগের বছরের পারফরম্যান্স অনুযায়ী। সেসময় দশটি ব্যাংক তালিকাভুক্ত করা হয়, যার মধ্যে শীর্ষে ছিল আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র সরওয়ার হোসেন বলেন, ব্যাংকগুলোকে সুশাসন, শুদ্ধাচার ও সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনে অনুপ্রাণিত করতেই সাসটেইনেবিলিটি রেটিং করা হয়। তিনি বলেন, ‘সিএসআর ব্যয়, গ্রিন ফাইন্যান্স, কোর ব্যাংকিং কার্যক্রম, খেলাপি ঋণের হারসহ বেশকিছু সূচকের ভিত্তিতে সাসটেইনেবিলিটি রেটিং তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক বিভাগের সহযোগিতায় রেটিং করা হয়।’ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কায়সার হামিদ টিবিএসকে বলেন, তার প্রতিষ্ঠান কোর ব্যাংকিং টেকসইতা, টেকসই অর্থায়ন, গ্রিন ফাইন্যান্স এবং সিএসআরে ভালো করায় টানা দ্বিতীয় বছর এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি অর্জন করেছে। ‘কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের এই স্বীকৃতি হল দায়িত্বশীল আর্থিক অনুশীলনের প্রতি আমাদের উৎসর্গের প্রমাণ’, বলেন তিনি।
ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ‘ব্র্যাক ব্যাংকের সৃষ্টি হয়েছে সোশ্যাল রেসপন্সিবল ফাইনান্সিং করার জন্য। আমরা যখন এসএমই শুরু করেছি তখন দেশের অনেক ব্যাংক জানতো না এসএমই কী জিনিস।’
‘সাসটেইনেবল রেটিং যে বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে করা হয়, আমরা অনেক আগ থেকেই সেগুলোকে নজর দিচ্ছি যার কারণে আমরা শীর্ষে অবস্থান করেছি। আশা করি সামনের সময়গুলোতেও আমরা শীর্ষস্থানেই থাকবো।’