নগরীর দেওয়ানহাট রেললাইনের ওপর ওভারব্রিজটি ১৯৭৪ সালে রেলওয়ের অর্থায়নে নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ২০০৬ সালে তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয় সিটি করপোরেশনকে। এই ওভারব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭৩ হাজার যানবাহন চলাচল করে।
দেওয়ানহাট ওভারব্রিজটি চট্টগ্রাম নগরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। ৫০ বছর আগের এই গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণের পর বড় কোনো সংস্কার হয়নি। ফলে দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সেতুটি। সেতুটির একাধিক পিলারে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ওভারব্রিজের পাশের অংশে বিভিন্ন ধরনের গাছ জন্মেছে। সে গাছের শিকড় পিলার ঢেকে দিয়েছে।
পিলার থেকে সিমেন্ট-বালুর আস্তর খসে পড়েছে। ওভারব্রিজটির টাইগারপাস অংশে ফুটপাতের লোহার বেষ্টনী ভেঙে গেছে। এই সেতুর পাশ দিয়ে চলছে এখন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ। ঝুঁকিপূর্ণ ওভারব্রিজের ওপর দিয়ে কাভার্ড ভ্যান, লরি, ট্রাক, বাসসহ বিভিন্ন ধরনের ভারী ও হালকা যানবাহন চলাচল করছে।
ধসের আশঙ্কা থাকলেও সংস্কারের দায়িত্ব নিতে রাজি নয় কোনো সরকারি সংস্থা। বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা ওভারব্রিজটি ধসে পড়লে চট্টগ্রাম নগরের যান চলাচলব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়া ওভারব্রিজটির বড় ধরনের সংস্কার যখন জরুরি হয়ে পড়েছে, তখন ওভারব্রিজটির দায়িত্ব নিচ্ছে না চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, রেলওয়ে এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। পরস্পরের ওপর দায় চাপিয়ে বড় ধরনের সংস্কারের বিষয়ে নীরব রয়েছে তিন সংস্থা।
সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা জানান, আগে নগরের টাইগারপাস থেকে দেওয়ানহাটে যাওয়ার জন্য সড়ক ছিল। কিন্তু ট্রেন চলাচলের কারণে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ১৯৭৩-৭৪ সালে রেলের অর্থায়নে ১ হাজার ২২০ ফুট দৈর্ঘ্যের ও ৬০ ফুট প্রশস্ততার ওভারব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। রেলওয়ের সক্ষমতা না থাকায় তাদের অনুরোধে সওজ ওভারব্রিজটি নির্মাণ করেছিল।
ওভারব্রিজটির এখন যে অবস্থা, তাতে বড় ধরনের সংস্কার জরুরি। কিন্তু ওভারব্রিজটি বুঝে না পাওয়ায় তা সংস্কার করতে চাইছে না সিটি করপোরেশন। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল বলছে এ সেতু সওজ বিভাগ নির্মাণ করেছিল। এতে তাদের কোনো দায়দায়িত্ব নেই। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে দেওয়ানহাট ওভারব্রিজ নির্মাণ করেছে এ রকম কোনো নথিপত্র সওজের কাছে নেই।
ওভারব্রিজটির পুরো অংশ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো জরুরি। নাহলে হতে পারে বড় ধরনের বিপদের কারণ। বড় ধরনের ডিজাস্টার এড়ানোর জন্য এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
এ মুহূর্তের সংবাদ