জিয়াবুল হক, টেকনাফ »
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নাফনদীর ওপারে মিয়ানমারের আকাশে হেলিকপ্টারের চক্কর দেখা গেছে। জ্বলছে মিয়ানমানের রাখাইন রাজ্য রাজ্যের মংডু টাউনশিপের উত্তরের কয়েকটি গ্রাম। বাংলাদেশ অংশ থেকে মিয়ানমারের কয়েকটি গ্রামে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে, সেই সঙ্গে শোনা গেছে বিকট বিস্ফোরণের শব্দও। ফলে টেকনাফ উপজেলার নাফনদীর সীমান্ত এলাকার লোকজন আতংকিত হয়ে পড়েছে।
সোমবার (৬ মে) সকাল থেকে ৭ মে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি ছিল বলে জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজ্বী মো. ইসলাম। তিনি বলেন, ‘টানা কয়েক দিন ধরে বিস্ফোরণের কোনও শব্দ শোনা না গেলেও সোমবার সকাল থেকে মিয়ানমার থেকে ভারি ভারি বিস্ফোরণের শব্দে আতংক হয়ে আছে লোকজন।
টেকনাফ পৌরসভার উত্তর জালিয়া পাড়া, দক্ষিণ জালিয়াপাড়া ও টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়া, মৌলভী পাড়া, সাবরাং ইউনিয়নের মন্ডল পাড়া, মগ পাড়া, লেজির পাড়া নাফ নদীর সোজা পূর্বে মিয়ানমারের ভেতর থেকে বিকট শব্দের বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে। ওই এলাকায় দিনভর উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা গেছে।’
সুত্রে জানা যায়, মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের উত্তর পাশে কাওয়ার বিল চৌকি দখলের পর আশিকাপাড়া, আরশিয়াপাড়া ও বসুয়ার এলাকায় উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার দিয়ে মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হচ্ছে। টেকনাফ পৌরসভার উত্তর জালিয়া পাড়া, চৌধুরী পাড়া ও দক্ষিণ জালিয়া পাড়া এলাকা থেকে সেই ধোঁয়ার কুণ্ডলীই দেখা যাচ্ছে, বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে মাটি।’
টেকনাফ পৌরসভার দক্ষিণ জালিয়াপাড়া এলাকার জামাল হোসেন জানান, সোমবার সকাল থেকে ৭ মে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত থেমে থেমে মিয়ানমারের ওপারের ভারি বিকট শব্দ শোনা গেছে। মিয়ানমারের আকাশে দেখা গেছে হেলিকপ্টারও। বোমার শব্দে দফায় দফায় কেঁপে উঠেছেন তারা। হেলিকপ্টার ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে অনেক মানুষ বিকেলে দিকে ট্রানজিট জেটিঘাটে জড়ো হন।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়া এলাকার জয়নাল আবেদীন বলেন, এত জোরে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে যেন সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসছে বোমা। আমরা বাড়ি ঘর থেকে বাহির হচ্ছি না ভয়ে।
টেকনাফ পৌরভার ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বোমা ও গোলার ভারী শব্দে আমার ওয়ার্ডের স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
হ্নীলা সীমান্তেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রশিদ।
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদী এলাকা এবং সীমান্ত সড়কে অন্য সময়ের তুলনায় বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।