৭৪-এর কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির
সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয়
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেছেন, ১৯৭৪ সালে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষসৃষ্টি করে একাত্তরের পরাজিতশক্তির ইন্ধনে যে সিন্ডিকেট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পথ প্রশস্ত করেছিল তারই ধারাবাহিকতায় এখনও সেই অশুভ সিন্ডিকেট কুমতলব হাসিলে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য নিত্য ভোগ্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। তিনি প্রশ্ন করেন, লক্ষ-লক্ষ টন নিত্য ভোগ্যপণ্য মজুত আছে, তবুও এগুলোর দাম এত ঊর্ধ্বগতি কেন? এতে বোঝা যাচ্ছে, উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক চাকাকে রুদ্ধ করে দিতে একটি অশুভমহল সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায়। কিন্তু সজাগ ও সচেতন জনগণ তা কিছুতেই হতে দেবে না। জেলহত্যা দিবস পালন উপলক্ষে গতকাল সকালে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট-চট্টগ্রাম মিলনায়তনে মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মাহতাব উদ্দীন আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় এদেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র শুরু হয় এবং তিনি তা টেরও পেয়েছিলেন। যখন তিনি ষড়যন্ত্র নির্মূলে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেন তখনই তাঁকে ষড়যন্ত্রকারীরা সপরিবারে হত্যা করে। তারপর থেকে এদেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন শুরু হয়। মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জন একে একে বির্সজন দিয়ে এদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত করা হয়। জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়া এভাবে পাকিস্তানি কায়দায় দেশশাসন করেছেন। আর আমরা ছিলাম নিজদেশে পরবাসী। এখন ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতি মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। এই উন্নত শির আর কখনো অবনত হবে না। মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ৩ নভেম্বর একটি নিষ্ঠুরতম ট্র্যাজেডি। তবে এতে জাতীয় চার নেতা প্রমাণ করেছেন আদর্শিক রাজনীতির মৃত্যু নেই। তাঁরা রক্ত দিয়ে ষড়যন্ত্রের চোরাবালিতে পা রাখেননি এবং শহিদ হয়েছেন। সর্বোপরি তাঁরা বঙ্গবন্ধুর মত ও পথকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যতম সহসভাপতি ও চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, যারা মনে করেছিল বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতাকে হত্যা করলেই বাংলাদেশ ধ্বংস হয়ে যাবে, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব মুছে যাবে এবং এদেশ পাকিস্তানি কনফেডারেশনভুক্ত হবে, তাদের সেই কুমতলব হাসিল হয়নি। বরং তারাই ইতিহাসের আস্থাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভাবনীয় উন্নয়ন দেখে বাংলাদেশ বিরোধীশক্তি ঈর্ষান্বিত। তাই তারা নানাভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই করোনাকালেও বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে, যা অনেক উন্নত দেশ এখনো পারেনি। এটাই শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় অর্জন যা বিশ্বপ্রশংসিত।
মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু। সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এডভোকেট সুনীল কুমার সরকার, এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, উপদেষ্টা আলহাজ শফর আলী, শেখ মোহাম্মদ ইছহাক, সম্পাদকম-লীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, সৈয়দ হাসান মাহমুদ শমসের, এডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, হাজি মো. হোসেন, হাজি জহুর আহমেদ, দিদারুল আলম চৌধুরী, আবদুল আহাদ, আবু তাহের, শহিদুল আলম, নির্বাহী সদস্য আবুল মনসুর, গাজী শফিউল আজিম, সৈয়দ আমিনুল হক, প্রকৌশলী বিজয় কুমার চৌধুরী কিষাণ, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, মহব্বত আলী খান, ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, মোরশেদ আকতার চৌধুরী, থানা আওয়ামী লীগের আলহাজ ফিরোজ আহমেদ, মো. হারুনুর রশিদ, হাজি ছিদ্দিক আলম, সুলতান আহমেদ চৌধুরী, মোমিনুল হক, সাহাব উদ্দিন আহমেদ, আনছারুল হক, কাজী আলতাফ হোসেন, হাজি মো. ইলিয়াছ, হাজি আবু তাহের, রেজাউল করিম কায়সার প্রমুখ। এছাড়া এ সময় ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়কসহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সকালে দলীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতার প্রতিকৃতিতে মাল্যদান শেষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন দারুল ফজল মার্কেট মসজিদের পেশ ইমাম আলহাজ ফজল কবির।