পাহাড়ে একদিন
পাহাড়ের গা বেয়ে যে ঝরনা নেমেছে
এখন তা খটখটে শুকনো খাঁড়ি
আমরা ভাবতে থাকি এর জল
কোন্ পথে আসে তার হদিস খুঁজতে হবে,
আমরা এগিয়ে যাই পাহাড়ের খাঁড়ি ধরে
চড়াই উৎরাই বেয়ে ঘন অরণ্যের দিকে
পাহাড়ের অদেখা চূড়ার পথে।
ভেবেছি পাহাড়ে খুব উঁচু থেকে
দেখে নেবো নিজের নীচুতা যত
তারপর যেতে থাকি বহুদূর
খাড়া খাড়া পর্বতের ‘পর।
দেখি না নীচুতা কিংবা
উচ্চতার কোন ভেদ,
কেবল জঙ্গল দেখি – গাঢ অন্ধকার
ঘিরে রাখে চারপাশের অনন্ত সবুজ…
ধান
শিশিরের একটা রূপালি ফোঁটা
বসে আছে ধানের শীষের ‘পরে
আর কৃষকের অশ্রু শুকিয়ে রয়েছে
নেত্র কোণে
আমাদের স্বপ্নগুলো প্রতিদিন একে একে
পিষে মারে কেউ কেউ উকুন যেমন
গোলায় রয়েছে তবে উনুনে চড়েনি
অনিদ্রা
তোমার অনুপস্থিতি মানে এক বড়ি ডরমিকাম
অথবা বিনিদ্র রাত অন্তহীন ভাবনার
কেবল সুঘ্রাণটুকু পাশের বালিশ থেকে নেচে নেচে ওঠে
তোমার চুলের ঘ্রাণ, ঘাম ও পারফিউম
সব আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধে
কেবল দু’চোখে আর কিছুতেই নিদ্রা নামে না।
যা তুমি চেয়েছো
যা তুমি চেয়েছো,
চির উদাসীন থাকি চতুষ্পর্শে
সুন্দরের দিক থেকে মুখ
ফিরিয়ে নিয়েছি, তবু
পৃথিবীর কোথাও নামেনি নীরবতা।
যা তুমি চেয়েছো,
বাতাসের সাথে কিংবা
কল্পনাপ্রসূত শত্রুর বিরুদ্ধে যত
বিশোদগার তোমার, আমি তার
চিরস্থায়ী সমর্থক হই, তবু
পৃথিবীর কোথাও নামেনি নীরবতা।
যা তুমি চেয়েছো, বন্ধুহীন আড্ডাহীন
আনন্দবিহীন এক মগ্ন জীবন যাপন
করে যাচ্ছি সন্তের মতোন, তবু
পৃথিবীর কোথাও নামেনি নীরবতা।
যা তুমি চেয়েছো তার খেসারত
দিতে দিতে জীবনের সব রস
ঝরে গেল। আর কতো অনর্থক
তোমার সুরেই যাব সুরটি মিলিয়ে!
জানি, পৃথিবীতে কোনো দিনই
নামবে না নীরবতা।
পদ
সেই ছোটবেলায় চতুষ্পদী গরুর রচনা পড়ে শিখেছিলাম পদ মানে পা। তারপর ব্যাকরণ ক্লাসে ক্রিয়াপদ কেমন পা ভাবতে ভাবতে বাসায় ফিরলে মা নানান পদের খাবার সাজিয়ে রাখেন টেবিলে। তারপর থেকে পদ জিনিষটা গোলমেলে ঠেকেছে চিরকাল। এদিকে শৈশব কাটার আগেই দেখি চারদিকে পদলেহনের উৎসব। পদস্খলনের যুগে পদবীধারীরাই সকল পদের দাবীদার। অতএব, বিপদ পদে পদে…