নিজস্ব প্রতিবেদক »
নগরীর জামালখানে গতকাল আয়োজিত বই বিনিময় উৎসবে সারাদিন ছিলো বইপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড়। রাস্তার দু’পাশে ফুটপাতে সারি সারি সাজানো বইয়ের স্টলে একজন বইপ্রেমী নিবন্ধন করে বদলে নিচ্ছে পাঁচটি বই। এজন্য ১১ ধরনের বই রেখেছিলো আয়োজকরা। এমন আয়োজন সত্যিই চমকে দিয়েছিলো পথচারীদের। এ আয়োজনে পথচারীর উঁকিও ছিলো চোখে পড়ার মতো। ‘বই নয়, জ্ঞানের বিনিময়’ স্লোগানে তৃতীয়বারের মতো এ আয়োজন করেছে ফেইল্ড ক্যামেরা স্টোরিজ।
গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এ উৎসব উদযাপিত হয় নগরীর জামালখান মোড়ে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল।
এছাড়া পাঠকদের সঙ্গে আড্ডা দিতে আসেন কবি ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান, জাতীয় দলের ক্রিকেটার ইয়াসির আলী রাব্বি।
এ উৎসবরে আয়োজক ফেইল্ড ক্যামেরা স্টোরিজের পরিচালক সাইদ খান সাগর বলেন, ‘পড়া কোনো বইয়ের বিনিময়ে না-পড়া কোনো বই সংগ্রহ করাই বই বিনিময় উৎসবের মূল কন্সেপ্ট। বই বিনিময়ের ধারণা নতুন কিছু নয়। স্কুলজীবনে বন্ধুদের সাথে আমরা তিন গোয়েন্দা সিরিজের বইগুলো আমরা যেভাবে বিনিময় করে নিতাম, এই আয়োজন তারই এক আনুষ্ঠানিক সংস্করণ। শীতকালীন বই বিনিময়ের সাথে অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে আমাদের শৈশব। বার্ষিক পরীক্ষা শেষে এ সময়ে আমরা পাড়ায় এর ওর থেকে বই নিয়ে পড়তে শুরু করতাম। আমাদের এই আয়োজন তারই এক নতুন সংস্করণ। প্রযুক্তির এই যুগেও আমরা জ্ঞানের এই বিনিময় ধরে রাখতে চাই।’
জানা যায়, এই বছরের শুরুতে মার্চ মাসে দ্বিতীয়বারের মতো একই ধরনের আয়োজন করেছিল ফেইল্ড ক্যামেরা স্টোরিজ। একই বছরে দুইবার কেন এমন আয়োজন সেই প্রশ্নের জবাব মিলল উৎসবের সহ-সমন্বয়ক মাহির আজরফের কাছে।
তিনি বলেন, ‘অনলাইন প্লাটফর্মগুলোতে শহরের বইপ্রেমীদের বারবার অনুরোধ আর এই উৎসবের জনপ্রিয়তাই তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছে এই আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে।’
কুয়াশাজড়ানো সকালে শুরু হওয়া এই আয়োজন শেষ হয় সন্ধ্যা সাতটায়। আয়োজকদের কাছ থেকে জানা যায় চৌদ্দ হাজার বই বিনিময় হয়েছে এবার। সর্বোচ্চ সংখ্যক বই বিনিময় হয়েছে একাডেমিক ক্যাটাগরি এবং কথাসাহিত্য ক্যাটাগরিতে। এ আয়োজনটির প্রধান পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ।