সুপ্রভাত ডেস্ক »
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক মিত্র জাতীয় পার্টিকে ২৬টি এবং ১৪ দলের শরিকদের ছয়টি আসন ছেড়ে দিয়ে ২৬৩ আসনে ভোট করার সিদ্ধান্ত জানাল আওয়ামী লীগ। দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া রোববার নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে এই সিদ্ধান্ত জানান। গতকাল রোববারই ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। যেসব আসন আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিচ্ছে, সেসব আসনে নৌকার প্রার্থীদের প্রত্যাহারের কথা নির্বাচন কমিশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।
ইসিতে পাঠানো চিঠিতে জাপার প্রার্থীদের ছাড় দিতে আওয়ামী লীগের ২৫ জনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়েছে। এর বাইরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনটি জাতীয় পার্টির সেলিম ওসমানের জন্য আগেই খালি রেখেছিল আওয়ামী লীগ। সেখানে কোনো প্রার্থীকে আগে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সব মিলিয়ে জাতীয় পার্টি ছাড় পেল ২৬ আসনে।
আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনার মধ্যে ১৪ দলের শরিকদের সাতটি আসন ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিল আওয়ামী লীগ। তবে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া চিঠিতে ছয়টি আসনে শরিকদের নৌকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
এবার রিটার্নিং কর্মকর্তার বাছাই এবং নির্বাচন কমিশনে আপিলে আওয়ামী লীগের পাঁচজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। ৩২টি আসন ছেড়ে দেওয়ায় এখন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা নিয়ে ভোট করবেন মোট ২৬৩ জন।
বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ১৪ দলের শরিকদের যে ছয়টি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তারাও ভোট করবেন নৌকা প্রতীকে। ফলে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটে থাকছেন মোট ২৬৯ জন।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টি যে ২৬টি আসনে ছাড় পেয়েছে, সেখানে তারা দলীয় প্রতীক লাঙ্গল নিয়েই ভোট করবেন।
আজ থেকে প্রচারণায় নামছেন প্রার্থীরা
আজ সোমবার বিকেল থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় নেমে পড়বেন প্রার্থীরা। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সারা দেশের রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেবেন। প্রতীক নেওয়ার পর থেকেই ভোটের মাঠে পুরোদমে প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা।
সংসদ নির্বাচনে বৈধ প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল রোববার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা চারটা পর্যন্ত। অনেক প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। এখন চূড়ান্ত হয়েছে প্রার্থী তালিকা।
সোমবার প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিন থেকেই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা। ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত ভোটের প্রচার চালাতে পারবেন তারা। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৬৩ আসনে লড়বে। দলটি ২৯৮ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়। এর মধ্যে ৫টি আসন ইসির বাছাইয়ে বাতিল হয়। এ ছাড়া শরিকদের ৬টি আসন ও জাতীয় পার্টিকে ২৬টি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়।
জাপার সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে যেসব অসনে
ঠাকুরগাঁও-৩, নীলফামারী-৩ ও ৪, রংপুর-১ ও ৩, কুড়িগ্রাম-১ ও ২, গাইবান্ধা-১ ও ২, বগুড়া-২ ও ৩, সাতক্ষীরা-২, পটুয়াখালী-১, বরিশাল-৩, পিরোজপুর-৩, ময়মনসিংহ-৫ ও ৮, কিশোরগঞ্জ-৩, মানিকগঞ্জ-১, ঢাকা-১৮, হবিগঞ্জ-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ফেনী-৩, চট্টগ্রাম-৫ ও ৮, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন। এই আসনগুলোতে নৌকার প্রার্থী থাকবে না।
১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে যেসব আসনে
বগুড়া-৪, রাজশাহী-২, কুষ্টিয়া-২, বরিশাল-২, পিরোজপুর-২, লক্ষীপুর-৪ আসনে। নারায়ণগঞ্জ-৫ ও কুষ্টিয়া-২ আসন বাকি রেখেই ২৯৮ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল ক্ষমতাসীনরা। এ দুই আসন জোটের শরিক দলের প্রার্থী সেলিম ওসমান ও হাসানুল হক ইনুকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।