সুপ্রভাত ডেস্ক »
নির্বাচনী প্রচারে বক্তৃতা করার সময় গুলিবিদ্ধ জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
জাপানের সম্প্রচার মাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালে নারা শহরে এক ট্রেন স্টেশনের কাছে নির্বাচনী পথসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় পেছন থেকে গুলি করা হয় ৬৭ বছর বয়সী আবেকে। খবর বিডিনিউজের।
গুলিবিদ্ধ আবে ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়লে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আবে দুই দফায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি টানা সবচেয়ে বেশিদিন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০২০ সালে স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিলেও ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (এলডিপি) তার প্রভাব বিদ্যমান ছিল। দলটির গুরুত্বপূর্ণ অংশ তার নিয়ন্ত্রণেই ছিল।
রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিতেই নারা শহরে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা গেলেন।
আবে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরপরই সন্দেহভাজন হামলাকারীকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনী। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে গুলি করার পরও ৪১ বছর বয়সী সন্দেহভাজন হামলাকারী তেতসুইয়া ইয়ামাগামি ঘটনাস্থলেই দাঁড়িয়ে ছিলেন, তবে অস্ত্রটি হাত থেকে ফেলে দেন। সেখানেই তাকে আটক করে ঘটনাস্থলে থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা, অস্ত্রটিও উদ্ধার করে।
অস্ত্রটি হাতে তৈরি করা হয়েছিল বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে।
আবেকে বাঁচাতে চিকিৎসকরা ‘লড়াই’ করে যাচ্ছেন বলে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।
এনএইচকে জানিয়েছে, বক্তৃতার প্রায় মাঝামাঝি সময়ে আবেকে পেছন থেকে গুলি করা হয়, তিনি পড়ে যান আর রক্তপাত হতে থাকে। সেখানে থেকে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
টোকিওর সাবেক গভর্নর ইয়োইচি মাসুজোয়ে এক টুইটে বলেছিলেন, অ্যাবে ‘কার্ডিওপ্লুমোনারি অ্যারেস্ট’ অবস্থায় আছেন।
প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, জাপানে কার্ডিওপ্লুমোনারি অ্যারেস্ট টার্মটি প্রায়ই মৃত্যুর বিষয়টি সরকারিভাবে নিশ্চিত করার আগে প্রাথমিক প্রতিবেদনগুলোতে ব্যবহার করা হয়।
বিবিসি জানায়, আবে যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন সেই নারা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে একটি সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।
সেখানে একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, আবে জাপানের স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকাল ৫টা ৩ মিনিটে (০৮:০৩ জিএমটি) মারা গেছেন।
আবের ঘাড়ের ডান দিকে গুলি লেগেছিল আর তার আঘাত হৃদপিণ্ড পর্যন্ত গভীর ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শরীরে কোনো বুলেট পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই দেশটির প্রভাবশালী এ রাজনীতিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
নারা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ২০ জন পেশাদার চিকিৎসক তাকে বাঁচানোর প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। প্রথমে ১০ জন চিকিৎসকের একটি দল চিকিৎসা শুরু করলেও পরে সংখ্যাটি দ্বিগুণ করা হয়।