জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষ : জুলাই সনদে সই করেনি এনসিপি

সুপ্রভাত ডেস্ক »

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে গঠন করা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়েছে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর)। চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ এই কমিশনের সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

শেষ দিনেও এনসিপিসহ পাঁচটি দল কমিশনের প্রণীত জুলাই জাতীয় সনদে সই করেনি। কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সনদ সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। দলগুলো যদি সই করতে চায়, তবে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে করতে পারবে।

গত বছরের অক্টোবরে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুদক এবং পুলিশ সংস্কারে ছয়টি পৃথক কমিশন করে সরকার। গত জানুয়ারিতে কমিশনগুলো প্রতিবেদন জমা দেয়। এইসব কমিশনের কয়েকটি প্রধান এবং কয়েকটির সদস্যদের নিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি গঠন করা ছয় মাস মেয়াদি ঐকমত্য কমিশন। ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সংলাপের মাধ্যমে কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়।

ঐকমত্য কমিশন ছয় সংস্কার কমিশনের ১৬৬ সুপারিশ নিয়ে গত মার্চে প্রথম দফার সংলাপ শুরু করে। ২২ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৪৪টি বৈঠকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ৬২ সংস্কারে ঐকমত্য ঘোষণা করে সরকার। ৩ জুন দ্বিতীয় দফার সংলাপের শুরু করেন প্রধান উপদেষ্টা। ৩১ জুলাই পর্যন্ত সংলাপে ২২ মৌলিক সংস্কারে সংখ্যাগরিষ্ঠে ঐকমত্য ঘোষণা করে কমিশন। মোট ৮৪ সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে প্রণয়ন করা হয় জুলাই সনদ।

আগস্টে কমিশনের মেয়াদ এক মাস বৃদ্ধি করা হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর দলগুলোর সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে সংলাপ হয়। এর আগে কমিশনের মেয়াদ ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। ওই মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখে কমিশন। ১৭ অক্টোবর সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় সনদে স্বাক্ষরে করে বিএনপি, জামায়াতসহ ২৪টি দল। পরেরদিন স্বাক্ষর করে আরেকটি দল। এর আগে কমিশনের মেয়াদ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।

গত ২৮ অক্টোবর সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশের খসড়া জমা দেয় কমিশন। ওই সময় কমিশন জানিয়েছিল, ৩১ অক্টোবরে এনসিপিসহ পাঁচটি দল চাইলে সনদে সই করতে পারবে। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেছেন, আদেশ জারির পর সনদে সইয়ের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

কমিশনের সাচিবিক সহায়তা দেয় সংসদ সচিবালয়। আলী রীয়াজ বলেছেন, বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে কমিশনের কার্যালয়ের একাংশ সংসদ সচিবালয়কে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী রোববার বাকি অংশ বুঝিয়ে দেওয়া হবে।