জশনে জুলুসে লাখো মানুষ

ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুস

নিজম্ব প্রতিবেদক »

১২ রবিউল আউয়াল। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই দিনটিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করেন।

চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতি বছর জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়।  হয়েছে। এবার ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে জশনে জুলুসের শোভাযাত্রায় লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আনজুমান-এ-রাহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উদ্যোগে নগরীর ষোলশহরের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়।

১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছর ১২ রবিউল আউয়াল আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রাম নগরীতে এ জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবার ছিল ৫২তম জশনে জুলুস।

১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম নগরীর বলুয়ার দীঘি খানকাহ থেকে এই জুলুসের সূচনা করেন আল্লামা তৈয়্যব শাহ (রহ.)। এরপর থেকে নিয়মিতভাবে আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ১২ রবিউল আউয়াল জুলুসের আয়োজন করে আসছে। এতে প্রতি বছর চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকা থেকে কয়েক লাখ মানুষ এতে অংশ নেন।

১৯৮৭ সাল থেকে আল্লামা তৈয়্যব শাহ (রহ.) এর ছেলে আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ জুলুসে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।

৫২তম এ জশনে জুলুসে নেতৃত্ব দেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবের শাহ। তিনি আল্লামা তাহের শাহ’র ছেলে। অতিথি হিসেবে ছিলেন শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ।

এদিকে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন জামেয়া ময়দানে এসে জড়ো হতে থাকেন। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা লোকজন বিবিরহাট, মুরাদপুর থেকে জুলুসে যোগ দেন।

জুলুস শুরুর আগে খানকায়ে কাদেরীয়ায় মুসলিম উম্মার শান্তি কামনায় দোয়া মোনাজাত পরিচালনা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবের শাহ।

জুলুসটি বিবিরহাট হয়ে মুরাদপুর, মুরাদপুর ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে ডান দিকে মোড় নিয়ে ষোলশহর, দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড় ঘুরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামেয়া মাদরাসা মাঠে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় ‘আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুলল্লাহ’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছিল পুরো বন্দর নগরী। এ সময় হামদ, নাত, তাকবির, দরুদ শরিফে মুখরিত ছিল নগরীর সড়কগুলো। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ মোটরসাইকেলে আবার কেউ ট্রাক কিংবা পিকআপের ওপর চেপে জুলুসে অংশ নেয়।

এ সময় শরবত, কমলা, চকলেট, পাউরুটি, খাবার পানিসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী অংশগ্রহণকারীদের বিতরণ করতে দেখা গেছে।

জুলুসকে ঘিরে নগরীর বিভিন্ন সড়কে ভাসমান মেলা বসেছে। এতে টুপি, মেসওয়াক, তসবিহ, ইসলামি বই, আতর, পতাকা, পাঞ্জাবি, পাজামা, জুতো বিক্রি হয়েছে।

জুলুস চলাকালে নগরে বিভিন্ন সড়কে নিরাপত্তায় মহানগর পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা কাজ করেছেন।

এছাড়া আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্সের (এএসএফ) রবিউল হাসান জুয়েল জানান, এএসএফের ৩০০ প্রশিক্ষিত সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এর বাইরে গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের কর্মী ও জামেয়ার হাজার হাজার ছাত্র স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন।