চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজ
তিনদিন বৈশাখী মেলা চলবে
নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হবে। সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে মেয়রের বাসভবনে মেলা আয়োজকদের সঙ্গে বৈঠক হয়। প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠকে বলীখেলা ও মেলা আয়োজনে একমত হন মেয়র এবং আয়োজকরা।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ‘বৈশাখ মাসের ১২ অর্থাৎ ২৬ এপ্রিলই বলীখেলা অনুষ্ঠিত হবে। নগরীর লালদীঘির মাঠ বন্ধ থাকায় পাশেই জেলা পরিষদ চত্বরে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে বলীখেলা হবে। পবিত্র মাহে রমজানের কারণে বিকেলের পরিবর্তে রাতে বলীখেলা অনুষ্ঠিত হবে। এতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হবে। বলীখেলাকে কেন্দ্র করে ২৫ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত তিনদিন বৈশাখী মেলাও অনুষ্ঠিত হবে।’
চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, ‘শনিবার সকালে সাড়ে ১১টায় আয়োজক কমিটি এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হবে। সেখানে বলীখেলা ও মেলার আয়োজন নিয়ে সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হবে। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা আয়োজক কমিটির সহ সভাপতি চৌধুরী ফরিদ বলেন, ‘মেয়রের সঙ্গে কথা হয়েছে। বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা হবে। লালদীঘির মাঠ বন্ধ থাকায় শনিবার বলীখেলার স্থান নির্ধারণ করা হবে। মেলার পুরোটাই এবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও ব্যবস্থাপনায় হবে।
বৈশাখী মেলা অন্যান্য বছরের মতো তিনদিন চলবে। এরপর আগামীবছর থেকে যথারীতি লালদীঘির মাঠে বলীখেলা হবে। এটা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’
বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে বৈশাখ মাসের ১২ তারিখ লালদীঘির ময়দানে হয় এই খেলা। এই খেলা ঘিরে তিন দিন লালদীঘির মাঠ ও আশপাশের রাস্তায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসে বৈশাখী মেলা।
করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালের খেলা বা মেলা কোনোটাই হয়নি। আর এবার লালদীঘি মাঠে ছয় দফা মঞ্চ, বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার টেরাকোটা ও মাঠ সংস্কার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের কথা রয়েছে। তাই বলী খেলা আয়োজনের জন্য এবার মাঠ পাওয়া যাচ্ছে না।
এ পরিস্থিতিতে গত বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে চলতি বছরের আয়োজন স্থগিত ঘোষণা করে আবদুল জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা আয়োজক কমিটি।
এরপর বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে আলোচনা শুরু হয়। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী এই আয়োজন অব্যাহত রাখার দাবি ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী আয়োজকদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেন।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুব সমাজকে সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে স্থানীয় আব্দুল জব্বার সওদাগর নগরীর লালদীঘি মাঠে কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। পরে সেই মল্লযুদ্ধই জব্বারের বলী খেলা নামে পরিচিত হয়।