জনগণের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন

কালুরঘাটে নতুন সেতু

অবশেষে বহু প্রতিক্ষিত কালুরঘাটে রেলসহ সড়ক সেতু নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রামের সার্কিট হাউস থেকে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ফলক উন্মোচন করেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময়
সড়ক পরিবহণ ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সাংবাদিকদের জানান, দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি কর্ণফুলী নদীর ওপর নতুন একটি কালুরঘাট সেতু নির্মাণ। এর নিমার্ণকাজ শুরু হওয়ায় বোয়ালখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী উৎফুল্ল। এখন যে সেতুটি আছে ১৯৩১ সালে সেটি নির্মাণ করা হয়েছিল। যদি এর মেয়াদকাল ৮০ বছরও ধরা হয়, তবে ২০১১ সালে এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বলে তিনি জানান।
সেতু উপদেষ্টা বলেন, নতুন সেতুর কাজ ২০২৯ সালের মধ্যে শেষ করে ২০৩০ সালে চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
দক্ষিণ চট্টগ্রামে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন চালু হলেও শতবর্ষী কালুরঘাট রেল সেতুর কারণে পূর্ণাঙ্গ সুফল পাচ্ছিল না দেশবাসী। কারণ সেতুটি অনেক আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছিল। এটি ১৯৩১ সালে নির্মাণ করেছিল ব্রুনিক অ্যান্ড কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর মিয়ানমারের সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগের জন্য এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ৬৩৮ মিটার দীর্ঘ সেতুটি ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০০৪ ও ২০১২ সালে দুই দফায় সংস্কার করেছিল রেলওয়ে। কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের পর ২০২৩ সালে ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি আরেক দফা সংস্কার করা হয়। এরপরও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি । ভারী যানবাহন চলতে দেওয়া হচ্ছে না। এসব যানবাহন চলছে ফেরি দিয়ে। এ ছাড়া সেতুটি একমুখী। একদিক থেকে যানবাহন এলে অপর প্রান্তের যানবাহনগুলোকে অপেক্ষায় থাকতে হয়। এসব কারণে যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ও রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্তর্র্বতী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর রেল-কাম-রোড সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে রেলওয়ে। ২০২৬ সালের শুরুর দিকে নতুন সেতুর কাজ শুরু হয়ে ২০৩০ সালে সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরুর কথা আছে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। সে সঙ্গে প্রত্যাশা করব জনগুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের কাজটি যথাসময়ে শেষ হবে।