রুমন ভট্টাচার্য :
নগরীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকৃত টেম্পু, ট্যাক্সি, টমটমসহ অন্যান্য ছোট পরিবহনগুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। সিটে বসার ক্ষেত্রে নেই সামাজিক দূরত্ব। একজনের গা ঘেঁষে বসে যাচ্ছে আরেকজন। চালকদের কারো মুখে মাস্ক আছে আবার কারো মুখে নেই। গ্লাভস কেউ পরছে না বললেই চলে। যাত্রীদের বেলায়ও একই চিত্র। জীবাণুনাশক ছিটানোর ব্যবস্থাও তেমন নেই।
গত কয়েকদিন ধরে নগরীর আন্দরকিল্লা, চকবাজার, বহদ্দারহাট মুরাদপুর, ২ নম্বর গেটসহ বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় চলাচলকৃত ছোট পরিবহনগুলোর চলাচলের চিত্র ছিল এমনই।
সরেজমিন দেখা যায়, চকবাজার ধুনীরপুল এলাকা থেকে রাহাত্তারপুল চলাচলকারী অবৈধ টমটমগুলোর প্রতিটিতে পাশপাশি বসে ৬ জন করে যাত্রী চলাচল করছে। কোনোটিতে নেই জীবাণুনাশকের ব্যবহার।
চকবাজার মোড় হতে থেকে ছেড়ে যাওয়া সিএনজিচালিত টমটমগুলোর চিত্র ছিল প্রায় একই। শুধু মাঝখানে একটি পার্টিশন দেওয়া। ভেতরে ৪ জন ও চালকের পাশে গা ঘেঁষে বসে ডান ও বামে বসানো হচ্ছে দু’জন। মুরাদপুর ও বহদ্দারহাট হতে ছেড়ে আসা টেম্পুগুলোর চিত্রও ভিন্ন ছিল না। ভিতরে বসা ৮ জন। চালকদের পাশে বসা ২ জন। এছাড়া বাইরে দাঁড়িয়ে আছে এক থেকে দুই জন।
আমতল হতে চকবাজার আসা টেম্পুগুলোতে ভিতরে ৮ জন ও ড্রাইভারের পাশে ছিল ২ জন। অলিখা মসজিদ হতে দু’নম্বর গেট চলাচলকারী টেম্পুগুলোতে ভিতরে ৮ জন ও ড্রাইভারের পাশে ২ জন আবার কেউ ১ জন করে বসিয়ে নিচ্ছেন। কেয়ারি ইলিয়াশিয়া মার্কেটের সামনে থেকে আগ্রাবাদের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ১ নম্বর টেম্পুগুলোতে আগের মত যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। এছাড়া সিএনজিচালিত ট্যাক্সিগুলো আগের মতই ভিতরে ৩ জন ও ড্রাইভারের পাশে ১ জন বসিয়ে চলাচল করছে দেদারছে।
এবিষয়ে গাড়ি চালকরা জানান, সরকারের সব শর্ত মেনে গাড়ি চলাচল করা সম্ভব নয়। তবে যতটুকু মানা যায় ততটুকু তারা মানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এক নম্বর রুটের টেম্পু চালক জাহাঙ্গীর বলেন, ‘গাড়িতে ২-৩ জনের বেশি উঠতে বারণ করলেও যাত্রীরা অনেক সময় জোর করে উঠে পরে। তাই বাধ্য হয়ে নিতে হয়।’
ধুনিরপুল-রাহাত্তারপুল রুটের টমটম চালক মো. নবী বলেন, ‘গাড়ি চালানোর সময় সবসময় মাস্ক ব্যবহার করি। কারণ বেশিক্ষণ পড়ে থাকলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তাই মাঝেমধ্যে একটু খুলে রাখি।’
তবে চালকরা ভাড়া দ্বিগুণ নিলেও সরকারি শর্তগুলোর কিছুই মানছে না বলে অভিযোগে যাত্রীদের। এসব বিষয়ে প্রশাসনের আরো কঠোর নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করেন যাত্রীরা। টেম্পুযাত্রী ইকবাল মাহমুদ বলেন, চকবাজার থেকে আন্দরকিল্লার ভাড়া ছিল ৫ টাকা। এখন নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা। শুধু নিয়ম করে দিলে তো হবে না, এসব ঠিকভাবে মানা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। না হয় চালকরা সুযোগ নিয়ে যাত্রীদের পকেট কাটবে।’
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম সুপ্রভাতকে বলেন, সবরকম গণপরিবহণ সরকারি নিয়ম ও শর্ত মেনে চলাচল করা বাধ্যতামূলক। এ বিষয়ে কোনো ছাড় নেই। যেখানেই অনিয়ম সেখানেই অভিযান।’ অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত পহেলা জুন হতে সারাদেশে চালু হয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল। বাড়ানো হয়েছে ৬০ শতাংশ ভাড়াও। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় ১১ শর্ত নির্ধারণ করা হয় দূরপাল্লা ও নগরপরিবহন বাস চলাচলে।
স্বদেশ