জামায়াত নেতা সাঈদীকে মুক্ত করতে দেশে ‘অস্থিতিশীল পরিস্থিতি’ তৈরির চেষ্টার অভিযোগ #
নিজস্ব প্রতিবেদক :
কারাবন্দি জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মুক্ত করতে দেশে ‘অস্থিতিশীল পরিস্থিতি’ তৈরির চেষ্টার অভিযোগে রকি বড়ুয়া নামে এক যুবকসহ ৬ সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭। জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদ-প্রাপ্ত হয়ে কারাগারে বন্দি আছেন।
গতকাল মঙ্গলবার ভোরে নগরের পাঁচলাইশ এলাকার একটি বাসা থেকে রকিকে আহত অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে আরও ছয় সহযোগীকে গ্রেফতার করে র্যাব। র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের প্রধান লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল বলেন, ‘রকি বড়ুয়া মূলত একজন প্রতারক। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার তথ্য প্রচার করে তিনি প্রতারণা করেন। সম্প্রতি তিনি সাজাপ্রাপ্ত মানবতাবিরোধী অপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলের সঙ্গে বৈঠকও করেন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোরে পাঁচলাইশ এলাকায় বাসায় অভিযানে গেলে ছাদ থেকে লাফ দেন রকি। পরে আহত অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার বাসায় অভিযান চালিয়ে বিদেশি মদ ও পিস্তল উদ্ধার করা হয়। পালাতে গিয়ে রকি তার দুই পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গ্রেফতার হওয়া ছয় সহযোগীর মধ্যে এক নারীও আছেন। তারা রকি বড়ুয়ার আস্তানায় থাকতেন। ওই আস্তানা থেকে স্ট্যাম্প-সিল, গেরুয়া পোশাক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকের ছবি জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদীর এবং সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ধর্মীয় বক্তা তারেক মনোয়ারের সঙ্গে রকি বড়ুয়ার বৈঠকের কিছু ছবি গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
জানা গেছে, গত ১ এপ্রিল মাসুদ সাঈদী ও তারেক মনোয়ারের সঙ্গে লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের পশ্চিম বিবিরবিলা গ্রামে নিজ বাড়িতে রকি বড়ুয়া বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সাঈদীকে মুক্ত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দু’টি দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির তৈরির পরিকল্পনা হয় বলে তথ্য পায় র্যাব।
বৈঠকের পর ২ মে অনলাইনে ছাত্রশিবির সাঈদীর মুক্তির দাবিতে সরব প্রচারণা চালায়। ৩ মে লোহাগাড়া এলাকায় রকি বড়ুয়ার বাড়ির পাশে একটি বৌদ্ধমন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে তাকে গ্রেফতারের জন্য খুঁজছিলেন র্যাব কর্মকর্তারা।
রকি বড়ুয়ার বিরুদ্ধে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এবং অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৭ এর প্রধান লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল।