যাচ্ছি আমি নদীর ডাকে
মোশতাক আহমেদ
নদীর ঘাটে বট-পাকুরের সবুজ শীতল ছায়া
গাছের ছায়ায় উদাস হাওয়ায় সুরের গীতল মায়া
মন ছুটে যায় একলা একা সচল পায়ে ধীরে
হাঁটছি আমি পদ্মা নদীর মাধবদিয়ার তীরে।
সেই নদীটার উজান বাঁকে বাঁকে
জলডুমুরের তমাল শাখে শাখে
লাল হলুদিয়া অরন্যে ফুলগুলি
সুবাস ছড়ায় বনমালতি গান ধরে বুলবুলি।
হিমেল হাওয়া যাচ্ছে ধেয়ে উজানতলীর মাঠে
শীতের পাখি নদীর পারে আওয়াজ তুলে হাঁটে
সর্ষেখেতে ফুলে ফুলে ভোরের রূপ-নীহারে
মেঘ কুয়াশার দৃশ্য যেন মন রাঙাতে পারে
কাঠবেড়ালি তা-ধিন নাচে যাচ্ছে সময় মাঘের
মাঘের শীতে কাঁপন ধরায় নিঝুম বনে বাঘের।
কল্পলোকে গল্পের সেই দেশ ভ্রমণেরকালে
মনটা আমার বন্দি হলো অরূপ মায়াজালে
ঢেউয়ের তালে বইছে তরী বইছে চপল নদী
পাখির ডাকে শীতের বিকেল দেখতে তুমি যদি!
আকাশ নীলে উড়াল মেঘের গহন ঘন ফাঁকে
রঙধনুটা সাতরঙে তার অনেক স্বপ্ন আঁকে
স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে আছি স্বপ্ন নিয়েই শেষে
যাচ্ছি আমি নদীর ডাকে অচিন নিরুদ্দেশে।
বাংলা আমার
শাহীন পরদেশী
বাংলা আমার মায়ের ভাষা
বাংলা আমার ভালোবাসা,
বাংলা আমার চিরচেনা
বাংলা আমার রক্তে কেনা।
বাংলা আমার কথার সুর
দুঃখ ব্যথা করে দুর,
বাংলা আমার আশার গান
যে দেশে যাই রাখে মান।
জন্ম আমার বাংলাদেশে
বাংলা আমার ঘাঁটি,
আমার স্বদেশ সোনা-মানিক
হীরের চেয়েও খাঁটি।
স্বপ্ন জয়ের বাতি
অপু বড়ুয়া
চাষির মুখে হাসি
রাখাল বাজায় বাঁশি
ধানের গন্ধে উছলে পড়ে
স্বপ্ন রাশি রাশি।
কাজলা গাঁয়ের জেলে
মাছ ধরে জাল ফেলে
বুকের মাঝে ইলিকঝিলিক
সুখের নাচন খেলে।
কামার কুমার তাঁতি
দুঃখ সুখের সাথি
সবার ঘরে জ্বলছে এখন
স্বপ্ন জয়ের বাতি।
সোনার বাংলাদেশে
ঢেউ জেগেছে সুখের
হাতছানিতে ডাকছে সুদিন
রেশ কেটেছে দুখের।
শীতের বুড়ি
শেলীনা আকতার খানম
শীত কুয়াশায় রাত্রি ভিজে
ভিজে ছনের ঘর,
রোদের দেখা নেই আজকে
সারাটা দিনভর।
শিশির ভেজা গাছের সবুজ
পাতার হাসি মুখ,
সেই না হাসি জড়িয়ে আছে
ঘাসের কোমল বুক।
লাঙল-জোয়াল কাঁধে নিয়ে
যাচ্ছে কৃষক মাঠে,
এক পায়েতে হাঁসের ছানা
দাঁড়িয়ে পুকুর ঘাটে।
ঠক ঠক ঠক শীতের বুড়ি
আসছে ঝোলা কাঁধে,
তানহা রিমু মাটির চুলোয়
চড়ুইভাতি রাঁধে।
লেবুফুল
কাসেম আলী রানা
লেবু ফুল,ওগো লেবু ফুল
একটা লেবু দাও,
তোমার কাছে হাত পেতেছি
ভালোবাসা নাও।
সবুজ সবুজ পাতার ফাঁকে
টুনটুনির বাসা,
বাসায় আছে শিশুছানা
দেখতে বেশ খাসা।
একটা লেবুর পাঁচটা বিচি
রসটা বড় টক,
টুনটুনিটা বন্ধু আমার
তোমার বন্ধু বক।
কিশোরীর দল
কুলসুম বিবি
আম গাছ জাম গাছ
বাঁশ ঝাড় তলে
দিনভর ছোটাছুটি
কিশোরীর দলে।
নুন দিয়ে তিন্তি
কচলিয়ে খায়
কাঁঠালের ডালে বসে
দোল খেয়ে যায়।
জলপাই গাছটার
আগা গোড়া বেয়ে
মনে হয় পাতাগুলো
তারা নিবে খেয়ে।
হেসে হেসে বলে কথা
সখীদের সনে
যার যত সুখ আছে
ঢেলে দেয় মনে।
লুকালুকি, বৌচি ও
কানামাছি খেলা
এই করে কেটে যায়
কিশোরীর বেলা।