জাদু
সাইফুল্লাহ কায়সার
জাদু আছে বাতাসে আর
জাদু আছে ঘাসে
তোমার দু’চোখের গভীরে
জাদুর ঝিলিক হাসে।
যদি তুমি বিশ্বাস করো
লাঠি হবে সোনা!
এ যেন এক ভালোবাসার
রঙিন স্বপ্ন বোনা।
স্বপ্নগুলো ডানা মেলে
উড়বে নীল আকাশে,
যারা হারায় বিশ্বাস তাদের
জীবন যায় ফ্যাকাসে।
অলসেরা দেখে না আর
রঙিন কোনো আলো,
সেই জাদুটা লুকিয়ে থাকে
চতুর্দিকে কালো।
স্বাগত শীতকাল
রাকিব আলগাজী
ময়না টিয়ে চড়ুই ফিঙে ধানশালিকের দেশে,
সু-স্বাগত শীত তোমাকে হেমন্তকাল শেষে।
কলমি ফুলের শুভ্র গায়ে জমছে শিশির কণা,
টিনের সরু ছিদ্রি পথে আলোর আনাগোনা।
রোদ পোহাচ্ছে তেপান্তরে থুত্থুরে এক বুড়ি
গল্পামোদে নিটোল বিভোর জন পনের কুড়ি।
পিঠার হাঁড়ি বোঝায় করে মধু মিয়ার গাড়ি,
গাঁয়ের কাঁচা মেঠোপথে যাচ্ছে মেয়ের বাড়ি।
বিলে-ঝিলে উড়ছে স্বাধীন পরিযায়ী পাখি,
সকাল-সাঁজে মিষ্টি কূজন মুগ্ধ করছে আঁখি।
শীত শুরুতেই অতিথিরা আসছে ওড়েওড়ে,
বক বালিহাঁস সারসপাখি সাইবেরিয়া ছেড়ে।
রাত্রি হতেই মা-ঝিয়েরা করছে চিতইপিঠা,
কী যে লাগে পিঠাপুলি দুধ-চিতইয়ের মিঠা।
পিঠা মোয়া পায়েস নাড়ু হেমন্তকাল শেষে,
শীত তোমাকে সু-স্বাগত সোনার বাংলাদেশে।
চাঁদ থাকে না
দীপক বড়ুয়া
চাঁদ থাকে না সূর্য ওঠে আকাশ আলোয় ভরা
কি মিষ্টি ! আলোর কণা নয় ঝাল টক কড়া
সূর্য ঠোঁটে দীপ্ত আলো পৃথিবীর কী আবেগ
আকাশ কোলে ঝলকানি দৌড় দিচ্ছে শাদা মেঘ
শীতল ঠান্ডা ঘূর্ণি হাওয়া ডিগবাজি খায় মিলে
একটি মেয়ে দৃশ্যটা ওই দেখে মতিঝিলে
ঈগল ওড়ে সঙ্গে ছানা মাঘের সাথে মিশে
এই ছবিটির মনোহরে পায় না নোরা দিশে
নোরার জন্ম জাঁহানপুরে ভালো লাগে ঢাকা
আকাশ বুকে থাকুক সূর্য থাকবে নাতো ফাঁকা
থাকবে আরো চাঁদও গ্রহ ঝিলিমিলি তারা
ওসব দেখে পাহাড় নদী হবে দিশেহারা
পাট সূর্ষ সবুজ মাঠের স্বর্ণালি ওই ধান
এসব দেখে গাইবে মিলে ভাটিয়ালি গান
মিষ্টি মধুর স্বপ্ন দেখে নোরার অবাক মন
এই সত্যি, মিথ্যে তো নয় জ্বলুক সারাক্ষণ!
ফুলি
শ্যামল বণিক অঞ্জন
বয়সটা তার সাত কিবা আট নামটি হলো ফুলি
ফোকলা দাঁতের মিষ্টি হাসি কেমন করে ভুলি!
ভাগ্যটি যে মন্দ ভীষণ ভেঙেছে দুই কুল
ঝরে গেছে কলিতে তাই হওয়ার আগে ফুল!
হয়নি পাওয়া মায়ের আদর বাবার স্নেহ মায়া
সূর্য্য ওঠার আগেই যেন নামলো কালো ছায়া!
হয়নি যাওয়া ইসকুলে তাই হয়নি লেখা পড়া
পরের ঘরে ঝিয়ের কাজেই জীবনটা পাড় করা!
কচি বুকে অনেক কথাই হয় না শুধু বলা
সবার অবহেলা সয়েও নীরবেই পথ চলা।
সাদিয়ার ভাবনা
নাজীর হুসাইন খান
আজকের আকাশ রাহাত-ফাহাদ
সাফা-নওমি সারাদের
নীল আকাশে হাওয়ায় চড়ে
বন্ধু হব তাঁরাদের।
জোছনা ভরা চাঁদের আলোই
তারার হাসির ঝলকে
আকাশ থেকে নামবে পরী
হাওয়ায় চোখের পলকে।
এসব নিয়ে চিন্তা করে
ঘুম আসে না সাদু মনির
অবশেষে হেসেই বলে
বন্ধু আমি দাদু মনির।
হৈমন্তীকার দেশে
আসাদুজ্জামান খান মুকুল
শালিক-টিয়ে-ময়না পাখি
বলছে তারা এসে,
হৈমন্তীকা আসছে দেখো
আমাদের এই দেশে।
ভোরের রবি তাতেই আজি
ছড়ায় মিষ্টি আলো,
কুহেলিকা ঘাসের ডগায়
লাগছে কতো ভালো।
হিমেল বায়ুর সুখের পরশ
লাগছে সবার অঙ্গে,
তার আবেশটি ছড়াচ্ছে আজ
এপার ওপার বঙ্গে।
সোনালী রঙ করছে ধারণ
মাঠের শ্যামল ধানে,
সুখের স্বপন দেখে কৃষক
মাতাইছে আজ গানে।
সবার ঘরে খুশির জোয়ার
পিঠাপুলির ঘ্রাণে,
হৈমন্তীকা আসছে বলে
জাগছে সাড়া প্রাণে!
হঠাৎ ভূমিকম্প
সাঈদুর রহমান লিটন
রুমের ভিতর একাই ছিলাম বসে
কাঁপতেছিলাম কি জানি, কোন দোষে?
একা একাই দিতে ছিলো দোলা
রুমের ভিতর যা যা ছিলো ঝোলা।
চেয়ারখানা করতেছিলো ঠকঠক
আতঙ্কে তাই করতেছিলাম বকবক।
কেউ ছিলো না সকাল বেলা ঘরে
ভাবছি আমি যাবো নাকি মরে?
মাথার ভিতর পেলাম একটু ঝাঁকি,
ভাবছি তখন ভূমিকম্প নাকি!
চমকে গিয়ে ভাবলাম কেউ তো নাইরে
তড়িঘড়ি এলাম ঘরের বাইরে।
চেয়ে দেখি মানুষগুলো ভয়ে
দোয়া- দরূদ যাচ্ছে ক’য়ে ক’য়ে।
বাড়তো যদি ঝাঁকির মাত্রা আরো
ভূমিকম্প রেহাই দিতো কারো?





















































