ছড়া ও কবিতা

কোথায় গেল সত্য

প্রণব মজুমদার

 

তোমরা কী কেউ সত্যকে দেখছো?

সবুজ-লাল প্রান্তরে, জলে-স্থলে

সংসারে, সমাজে ও মানবমনে

ভালোবাসায় কিংবা মায়ায়

লোভে এবং লালসায়?

কোথায় লুকালো সত্য?

বলতে পারো নেপথ্য?

 

স্বার্থমোহে ‘মানুষ’ দৃশ্যমান দৃষ্টিহীন-

মূক-বধির দূরাভিসন্ধি ছকে রাতদিন

গাজায় থামে না অবুঝ শিশুর নিধন

যৌনতার জন্য বলি হয় আত্মজা!

জন্মদাত্রীর কাঁপে না একটুও হাত

তবে কী ভুল প্রাথমিক ধারাপাত?

ছেলের হাতে বাবার জীবনপাত

সত্যের মতো ইতিহাস মুছে যায়

মিথ্যাটা ক্ষণে ক্ষণে আঁধার পায়

সত্য মিথ্যা হয়ে যায় নিমিষে!

সত্যকে পাবো তাহলে কিসে?

 

 

 

 

অথচ

টিপু সুলতান

 

শিশুরা পালাইতেছে কর্পূরের মতো; ক্লান্ত হলে

উঠে পড়ছে ফাঁপা হাওয়ায়-

বহু পুরাতন সুরে অন্ধ বাদুড়ের চন্দ্রমুখী ডানায়

উন্নত শহরে ঢুকে পড়ে গ্রামীণ গোলাপকলি-

শিশুদের স্থির জন্মসাল মনে নেই, বিশালত্ব ছুঁই

 

এই যে, ব্রাকেটে বাঁধানো মর্ত্যকীট বয়স, সে-তো

অষ্টাদশী রমণীর খোঁপাবন্দি রক্তজমাট বিভ্রম

কেবল তরুণ হওয়া মুখের বহু সন্দেহ মালা গাঁথে

অথচ…

আজীবন গ্রীবা তুলে হাঁটতেছে গহিনে যমজ

হুলিয়া ঘিরে উপস্থিতি এক বিলীয়মান

নকশাকাটা হাঁটবার পথ, ঢেউয়ে ঝুঁটিপরা নদী

অপেক্ষা কোরো না, ডাকটিকিট যুক্ত ধানখেত

সেসব আমাদের ছিল বহু আগে, উর্বর আসবাবপত্র!

 

 

 

পাণ্ডুর ভাগ্যলিপি

বশির আহমেদ

 

আমার মন খারাপ থাকলে সবুজ অভিশ্রান্ত বিকেলটাকে

মনে হয় অনুজ্জ্বল এরোক্সনের ছোঁয়ায় মরে যাওয়া বিবর্ণ উদ্ভিদের মতো।

আমি পকেট ভর্তি দুঃখ নিয়ে বিষাদগীতি শুনি!

চেরাই কলে খুন হওয়া বোধবৃক্ষের মতো খুন হতে হতে আমি মমি হয়ে আছি,

গোধূলি সন্ধ্যায় উড়ে যাওয়া পরিযায়ী পাখির মতো যেতে যেতে আমি রেখে যাই বিষাদের পদচিহ্ন।

কোন এক স্বপ্ন বিভোর সময়ে তৃষ্ণাজলে এঁকেছিলাম সুখের মানচিত্র, অথচ পাণ্ডুর ভাগ্যলিপি!