বর্ষাকালে কদম ডালে
মোশতাক আহমেদ
বর্ষাকালে কদম ডালে গান ধরেছে কাকে
অবাক চোখে তাকিয়ে দেখি গ্রাম ভাসা বিলটাকে।
আকাশ পারে মেঘের ভেলা
নদীতে অথৈ জলের খেলা
বিকেল সাজে বেলা অবেলা
পদ্মা নদীর বাঁকে
বর্ষাকালে কদম ডালে গান ধরেছে কাকে।
সন্ধ্যা নামে নদীর ঘাটে
যাচ্ছে মানুষ টেপার হাটে
আমরা উড়ুনচন্ডী মাঠে
খবরটা কে রাখে?
বর্ষাকালে কদম ডালে গান ধরেছে কাকে।
লোকটা আমি নিরেট বোকা
মায়ের চোখে ছোট্র খোকা
আঁধার রাতে ঝিঁ ঝিঁ পোঁকা
ঝোঁপের শাখে শাখে
বর্ষাকালে কদম ডালে গান ধরেছে কাকে।
রাতের বেলা হারিয়ে গেলে
মা গো তোমায় একলা ফেলে
আমি হলে বনের পাখি
ওমা তুমি কাঁদবে নাকি
না পেলে আমাকে?
বর্ষাকালে কদম ডালে গান ধরেছে কাকে।
বিষ্টি মেয়ে
শেলীনা আকতার খানম
অঝোর ধারায় বিষ্টি মেয়ের
কান্না শুরু ভোরে,
শিউলি কদমতলায় পড়ে
বিষ্টি প্রবল জোরে।
সবুজ ঘাসের ডগা জড়ায়
বিষ্টি মেয়ের চুল,
জল টুপ টুপ পাতায় ঝোলে
রূপোর কানের দুল।
বিষ্টি জলে দামাল ছেলের
কী যে ছোটাছুটি!
পাবদা মাগুর শিং-এর সাথে
হাসছে সাদা পুঁটি।
বৃষ্টি পড়ে
জাহেদ কায়সার
বৃষ্টি পড়ে ঝুম-ঝমা-ঝম
আজকে সারাবেলা,
আকাশ জুড়ে কালো মেঘের
লুকোচুরির খেলা।
বৃষ্টি পড়ে নৃত্য তালে
মনে লাগে সুখ,
মেঘগুলো যেই গর্জে ওঠে
বুক করে ধুকধুক।
বৃষ্টি পড়ে খালে বিলে
মাঠে কোলাব্যাঙ,
গানের সুরে চেঁচায় শুধু
ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ।
মেঘবালিকা আজ উতলা
দুচোখে নেই ঘুম
সারাটাদিন বৃষ্টি পড়ে
ঝুম ঝুমা ঝম ঝুম।
মনের খাতা
বাসুদেব খাস্তগীর
যখন হাঁটি আকাশ নীলে মেঘের ভাঁজে ভাঁজে
মনের ছুটি পেখম মেলে মন বসে না কাজে।
নদীর চরে চোরাবালির লুকানো সেই ছায়া
শীতল হয়ে ছড়ায় মনে আবেগ মাখা মায়া।
সকাল হলে সবুজ ঘাসে পদধ্বনির সুর
সুরের ভেলা মন রাঙিয়ে ডাকে অচিনপুর।
গুনগুনিয়ে গান শোনালে ভ্রমর এসে কানে
ভ্রমর যেন তার পাখাতে ফুলের বনে টানে।
বাতাস এসে চাঁপাফুলের সুবাস ঢালে নাকে
থির দাঁড়িয়ে যায় না থাকা ডাকে পথের বাঁকে।
কাকতাড়ুয়া ভয় দেখিয়ে জয়ের আনে ভোর
সেই মিছিলে থাকবো বলে হঠাৎ খোলে দোর।
দোলনা হয়ে আসন পাতে শান বাঁধানো ঘাট
সজীবতায় ভোরের আলো খোলে সবুজ মাঠ।
আর থাকে না ঘুমের ঘোরে সকল ঝরা পাতা
নীরবতার পাঠ চুকিয়ে খোলে মনের খাতা।