আষাঢ়ের বৃষ্টিতে
জহিরুল হক বিদ্যুৎ
মেঘ গুড়গুড় ডাকছে দেয়া
বৃষ্টি এলো এই বুঝি,
আষাঢ় মাসের বাদল দিনে
শৈশবের ঐ দিন খুঁজি।
কচুর পাতায় তৈরি ছাতায়
তার নিচেতে লুকিয়ে মুখ,
টাপুরটুপুর জলের গানে
মন মাতানো কী যে সুখ!
বল বানিয়ে করি খেলা
কাদা মেখেই হুলস্থুল,
কেউ বা আবার গাছে চড়ে
আনতো ছিঁড়ে কদমফুল।
কেউ বা গাছের ডালে চড়ে
লম্ফ দিতো পুকুরে,
ব্যাঙেরা সব উঠতো ডেকে
বৃষ্টি রোদের দুপুরে।
আষাঢ়ে কদম ফুল
আব্দুস সাত্তার সুমন
মিষ্টি বাতাস বর্ষা বইছে
আষাঢ় মাসের কালে,
হলুদিয়া সুবাস ছড়ায়
কদম ফুলের ডালে।
গন্ধ ছড়ায় সকাল বিকাল
বাতাস বহে দিলে,
টাপুর টুপুর বৃষ্টি ঝরে
আমার বাড়ির ঝিলে।
বৃষ্টি ভেজা পাতায় পাতায়
আষাঢ় কদম ফুলে,
পাখ পাখালি কলরবে
মিলছে দুটি কুলে।
হরেক রকম ফুটন্ত ফুল
আষাঢ় মাসের জাগান,
পাড়ায় পাড়ায় গন্ধ বিলায়
কদম ফুলের বাগান।
জ্যৈষ্ঠ আষাঢ় সুবাস ছড়ায়
রোদ বৃষ্টির ক্ষণে,
কদম ফুলের আগমনে
দোলায় সবার মনে।
আষাঢ়ী ফুল
শাহজালাল সুজন
সাদা মেঘের বরফ গলে
বৃষ্টি এলো বেশ,
কদম ফুলের পাপড়ি মেলে
ছড়ায় সাদা কেশ।
জুঁই মালতী চম্পা কেয়া
নৃত্যে কাড়ে প্রাণ,
নদীর ঘাটে হিজল গাছে
পাতায় ধরে গান।
দোলনচাঁপা কামিনী আর
অলকানন্দা হাসে,
জোয়ার গাঙে নতুন পানি
শালুকলতা ভাসে।
বকুল টগর লিলি রঙ্গন
হাসনাহেনার দুল,
রূপের রানি আমার দেশে
হয় আষাঢ়ী ফুল।
ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি
শচীন্দ্র নাথ গাইন
নূপুর বাজায় বৃষ্টি মেয়ে ঝুমুর ঝুমুর তালে
মিষ্টি হাওয়ার মৃদু কাঁপন কচিপাতার ডালে।
মন ছুটে যায় তেপান্তরের অচেনা কোন্ দেশে
ভাবনাগুলো ডানা মেলে বেড়ায় ভেসে ভেসে।
সুরের বাঁশি বাজিয়ে চলে ঝাউ-জারুলের গাছে
মধুর স্বপন জড়িয়ে রাখে বনকোয়েলার নাচে।
রোদেলা দিন মেঘমালারা পাখায় রাখে ঢেকে
অসীম আকাশ চলতে থাকে রঙের ছবি এঁকে।
হাসির রেখা দেয় ছড়িয়ে ফুলপাখিদের ঠোঁটে
কদমফুলের গন্ধ মিঠে ধীর বাতাসে ছোটে।
জল থই থই ঢেউয়ের নদীর উজানচলা বাঁকে
ডুবসাঁতারের খেলায় মাতে বালিহাঁসের ঝাঁকে।
শান্ত সবুজ স্নিগ্ধ রূপের কোমল পরশ মাখে
সতেজতা বিলিয়ে দিতে হাত বাড়িয়ে ডাকে।
ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি মধুর স্মৃতির সুতোয় টানে
হৃদয়পুরে খুশির আবেশ মেঘলাদিনের গানে।