ছড়া ও কবিতা

হাসে মায়ের শাড়ি

আখতারুল ইসলাম

মেঘের সাদা মুখের কোণে হাসছে দেখো চাঁদ
জোছনা ঝরে মনের ঘরে স্বপ্নমাখা স্বাদ।
ঐ আকাশের তারার মেলা হাসছে ফুলের কোলে
নীলাম্বরী আলোর ছটা মনে কাঁপন তোলে।

চিকন চাঁদে আলোর ঘুড়ি উড়ছে সারা রাত
আমিও ঠিক উড়তে থাকি চাঁদেই রেখে হাত।
নিকষ কালো রাতের পাখি ছোটে সঙ্গোপনে
আসলো নেমে চাঁদের বুড়ি জোছনা ধোঁয়া বনে।

তখন আমি চাঁদের সাথে নাইতে নামি জলে
নিঘুম রাতে আনন্দে যে সুখের দোলা চলে।
পুব আকাশে সূর্যটাও দিচ্ছে উঁকি যেই
মা ডাকতেই, ঘুম চোখে ঐ হারিয়ে ফেলি খেই।

ফুলের মত বোনটি হাসে ছুটছে সারা বাড়ি
চাপা ফুলের সুবাস নিয়ে, হাসে মায়ের শাড়ি।
গাইছে পাখি, মিষ্টি সুরে ভাঙে আমার নিদ
পাতার ঠোঁটে শিশির ছোঁয়া, মা বলে আজ ঈদ।

 

 

মা সেরা উপহার

মোখতারুল ইসলাম মিলন

মাকে নিয়ে লিখব আমি
মা যে আমার অনেক দামি
সেরা উপহার,
জগৎ জুড়ে তাঁর‘চে আপন
নেইতো কেহ আর।

মা যে আমার প্রথম গুরু
মুখের ভাষা শেখা শুরু
তিনি প্রথম স্বর,
আগলে রাখে জীবন জুড়ে
করেনি তো পর।

মাগো তোমায় ভালোবাসি
নিজের চেয়েও অনেক বেশি
ভুলতে পারি নাকো,
কেমন আছো দূরের দেশে;
ভালো যেন থাকো।

 

 

মাতৃস্নেহের জয়

অপু চৌধুরী

জলের ভেতর কুমির নাচে
ডাঙায় দেখি বাঘ
রোদের খরায় কাঁপে দুপুর
ঝিমোয় ফুলের বাগ।

বাগ পেরিয়েই গিয়েছে মা
উগ্র বাঘের পাছে
যেখানে তাঁর খড়ের ঘরে
বুকের মানিক আছে।

ভয় করেনি জেনেও মা
বিপদ পদে পদে
আনতে গেছে মানিককে তাঁর
রাখতে নিরাপদে।

বাঁধলো তাতে ভীষণ বিপাক
কুমির গেছে রেগে
ঘুমন্ত বাঘ লাফ দিল এক
কাঁচা ঘুমে জেগে।

মৃত্যু ফাঁদের খাদ দেখে মা
পায়নি তবু ভয়
বাঘ-কুমিরও দেখলো তাতে,
মাতৃস্নেহের জয়।

 

স্নেহময়ী মা

নকুল শর্ম্মা

প্রাণ জুড়ানো শীতল বুকে
স্নেহের ছায়ায় পরম সুখে
বেঁধে রাখেন মা,
এমন সুখের সোনার পাখি
মনভোলানো ডাকাডাকি
কোথাও পাবে না।

আঁধার ঘরে দুখের সাথী
ছড়ায় আলো দিবস রাতি
যাঁর তুলনা নাই,
দুঃখ সুখের নৌকা বেয়ে
ঘুমপাড়ানির গানটি গেয়ে
কোলে নীরব ঠাঁই।

যাঁর কারণে বিশ্ব দেখি
মা ছাড়া যে সকল মেকি
অমূল্য রতন,
মায়ের ভাষায় কথা শিখি
ভালোবাসার কাব্য লিখি
অপূর্ব কথন।

 

 

মা সাহসের বাতি

আলমগীর কবির

মা সাহসের বাতি জ্বেলে বলেন সামনে ছোটো,
হাসনাহেনা গোলাপ বেলি শাপলা হয়ে ফোটো।

নতুন পথে আলোর খোঁজে নতুন করে সাজো,
গাছের সবুজ পাতায় পাতায় বৃষ্টি হয়ে বাজো।

মেঘের আঁধার দাও সরিয়ে চাঁদের মতো হাসো,
নভোচারীর মতো করে মহাকাশে ভাসো!

স্বপ্ন রঙে মনের আকাশ ভালোবেসে রাঙাও,
যে ঘুমিয়ে পরম স্নেহে ঘুম আগে তার ভাঙাও।

অন্ধকারের বাঁক পেরিয়ে মনের দুয়ার খোলো,
হতাশাকে দূরে ঠেলে খুশির দোলায় দোলো।

 

মা যে অধীশ্বর

নান্টু বড়ুয়া

ভোর হলে মা কপাল জুড়ে
চুমু দিয়ে ডাকে,
সারা দিন রাত আমার ওপর
আকাশ হয়ে থাকে!

শাসন বারণ স্নেহ মায়ায়
আমায় বেঁধে রাখে,
হাজর রকম স্বপ্ন সিঁড়ি
আমার জন্যে আঁকে।

মা-যে আমার স্বর্গসম
একটি আধার শক্তি,
তাই তো জানাই হাজার সেলাম
শ্রদ্ধা প্রণাম ভক্তি।