ছড়া ও কবিতা

যাচ্ছি সবাই বোশেখ মেলায়

উৎপলকান্তি বড়ুয়া

চলরে সবাই আর দেরি নয় সময় বয়ে যায়
কে কে যাবি চল মেলাতে কে কে যাবি আয়।
পশ্চিমে রোদ কাত হয়েছে আর মোটে নয় হেলা
বছর ঘুরে আবার এলো বৈশাখের এই মেলা।

মুমু সৌরিক মিষ্টি ছুটু তোরা গেছিস এসে
অর্পিতা খুব খুশিরে তুই আসলি হেসে হেসে!
পুষ্পিতা কি নিবি ফিতা টকটকে লাল নীল?
নয় দেরি চল হাঁটতে হবে দেড় কি,মি, পথ বিল।

কিনবে অভি বাঁশের বাঁশি বাজে দারুন সুরে
কিচ্ছুটি না কিনবে ধ্রুব দেখবে মেলা ঘুরে।
তানিয়া রুমি খাবে কিনে চিড়া ও মুড়ির মোলা
সবার আগে সোনিয়া তৌহি চড়বে নাগরদোলা।

কিনবো আমি যা, সেই হিসাব নয় মোটেও কম
বাজনার ঢোল ফরফরি আর কিনবো রে টমটম!
হাঁটতে ত্বরা না পেরে কেউ দিস না আবার কেঁদে
আমরা সবাই বোশেখ মেলায় যাচ্ছিরে দল বেঁধে।

 

 

চোখের পাতায়

মোশতাক আহমেদ

বকুল ফোটে বোশেখ মাসে
ঘাস কচুরি জলে ভাসে।
রোদ ঝলমল জলজ ঘাসে
বৃষ্টি ফোটা মিষ্টি হাসে
এই রোদ এই বৃষ্টি আসে।

ভ্রমর কালো
মেঘলা দুপুর
মাছের পুকুর
টাপুর টুপুর।

গয়নাপরা
ময়না খাঁচায়
হাওয়ার দোলে
পুচ্ছ নাচায়।
হিজল ডালে
ডাহুক পাখি,,,
পুকুর পারে
ডাকাডাকি।

বোশেখ মাসে বিকেলবেলা
খেলছি কতো রঙের খেলা
স্মৃতির পাতায় ছেলেবেলা
চোখের তারায় ভেসে ওঠে
তীর্থঘাটের বান্নি মেলা।

 

 

সাঁতার

মাসুম মোরশেদ

রৌদ্র দুপুর মিয়ার পুকুর
সাঁতার কাটি খুব
হই-হল্লা দল বেঁধে সব
হাপুস-হুপুস ডুব।

ডুবে ডুবে ধরা ছোঁয়া
চোখ হয়ে যায় লাল
দিন কেটে যায় মহানন্দে
আর বাড়িতে গাল।

দাদি আমায় ভালবাসে
আগলে রাখে ঠিক
হই-হল্লায় দিন কেটে যায়
বন্ধু-বান্ধব ঠিক।

 

 

ফুলের অনুভব

বাসুদেব খাস্তগীর

ফুল কখনো ভুল করে না পরকে ভালোবাসতে
ফুলই পারে রৌদ্র ঝড়ে সারা জীবন হাসতে।
ফুল করে না নিজের মাঝে নিজের সুবাস ধারণ
তার আনন্দ অন্যে নিলে সে করে না বারণ।

ফুলের উদার জমিন জুড়ে সুন্দরের হয় চাষ
ফুলের দেশে হিংসা নিন্দার হয় না বসবাস।
ফুলরা এসে জনপদের বাড়ায় কত শোভা
ফুল চিরকাল সবার কাছে দেখতে মনোলোভা।

ফুলের জীবন ক্ষণস্থায়ী নয় মোটে তা সত্যি
তার আবেদন চিরকালীন মিথ্যে নয় এক রত্তি।
এই চিরকাল বেঁচে থাকা নয় শুধু তার ঘরে
বাঁচা মানে মন মননে আনন্দ সুন্দরে।

একটি ফুলের বাগান যদি বসত করে মনে
হাজার ফুলের জ্বালবে আলো অন্ধকারময় বনে।
চাওয়া পাওয়া এক জীবনের পূর্ণতা হয় সব
জীবন জুড়ে থাকবে যখন ফুলের অনুভব।

 

 

ঝড়বাদলের রাতে

মাসুম হাসান

নিকষ কালো মেঘে
আকাশ গেছে ঢেকে –
পাগলা হাওয়া বিজলী যেন
উঠছে ফুঁসে রেগে!

ঝড় উঠেছে ঝড়
থর থর থর থর –
বৃক্ষশাখা তরুলতা
কাঁপছে বাড়িঘর।

ধাপুসধুপুস টিনের চালে
পড়ছে শিলা খুউব –
ঝড়বাদলের এমন রাতে
খোকনসোনা চুপ।

 

 

হুলো রাজা

মোস্তাফিজুল হক

হেতালে এক হুলোর নাকি
গোঁফ গিয়েছে পেকে,
মিঁয়াও ভুলে তাই নাকি ও
হুংকারে লেজ বেঁকে!

‘লেজ বড়ো আর ডোরাকাটা
বাঘের ছানা সে কে?
তল্লাটে বাঘ হয়েই আছি
বাঘ হতে চাস কে কে?’

ওর আওয়াজে কাঁদে হরিণ
কাঁদে বাঘের ছানা,
বাঘ-বাঘিনী মরছে আগেই
কে দেবে আজ হানা?

প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত গাধা
দৌড়ে পালায় দূরে,
বানর বলে আসুন, বসুন
রাজার আসন জুড়ে।

রাজা এবার থাবা মেরে
ওয়াও বলে রাগে,
হুলোরাজার শাসন দেখে
পরানে ভয় জাগে!

 

 

শিয়ালের পাঠশালা

শারমিন নাহার ঝর্ণা

শিয়াল মামার পাঠশালাতে
হরেক রকম ছাত্র,
কুমির ছানা বকের ছানা
হাজির আছে মাত্র।

বানর ছানা আজ আসেনি
ঠান্ডা জ্বরে মরছে,
শিয়াল মামা সেই সুযোগে
কুমির ছানা ধরছে।

কুমির ছানা খেয়ে শিয়াল
বকের ছানা ধরে,
পেটের দায়ে শিয়াল মামা
পাঠশালাটি গড়ে।

 

 

রবির ছবি

সুব্রত চৌধুরী

দাওয়ায় বসে খুকুমনি
আঁকে রবির ছবি,
রংতুলিতে ফুলের মালা
বরনডালা সবই।

লম্বা চুলে হাওয়ায় দোলে
খড়ম দু’টি পায়,
জারুল তলে মালা গলে
দাঁড়িয়ে আছেন ঠায়।

পায়ে পায়ে শোভাযাত্রা
কন্ঠে রবির সুর,
সুরের আবেশ যায় ছড়িয়ে
দূরে অচিনপুর।

সুরের ধ্বনি ভেসে আসে
মঙ্গলঘন্টা শাঁখে,
জন্মদিনের খুশির রেণু
সবাই গায়ে মাখে।

কাব্য গানে মাতে সবাই
নুপুর পায়ে নৃত্য,
আকাশ বাতাস খুশির জোয়ার
নেচে ওঠে চিত্ত।

 

 

বই

মো. দিদারুল ইসলাম

বই যে সবার পরম বন্ধু
বই জগতের আলো,
বইয়ে সময় দিয়ে খোকা
জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালো।

মোবাইল ফোন ছেড়ে খোকা
বইকে আঁকড়ে ধরো,
পড়ালেখার আলো দিয়ে
জীবনটাকে গড়ো।

বই-ই অসীম জ্ঞানসমুদ্র
বই পৃথিবীর সেরা,
বইয়ের সাথে সুসম্পর্কে
জীবন সুখে ঘেরা।